Durga Puja 2023

ঘোষাল বাড়িতে দেবীর হাতে অস্ত্র তুলে দেন বংশের কৃতীরাই

প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুটের মধ্যে। একটি কাঠামোয় তিনটি প্রকোষ্ঠ থাকে। দু’টি প্রকোষ্ঠে মহাদেব এবং শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি থাকে। ত্রিভুজের আকারে তিনটি চালচিত্রে তিনটি প্রকোষ্ঠ থাকে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

কোন্নগর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৩২
Share:

চলছে প্রতিমা তৈরি। —নিজস্ব চিত্র।

গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে হুগলির মতো প্রাচীন জনপদে বাড়ির পুজো হিসেবে কোন্নগরের ঘোষাল বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম। ১৪৫৪ সালে দিল্লির সিংহাসনে যখন সুলতান বহুলোল লোদী শাসন চালাচ্ছেন তখন থেকেই কোন্নগরের ঘোষাল বাড়িতে দেবীর আরাধনা শুরু। পরে সম্রাট আকবর তাঁর শাসনকালে কোন্নগরের ঘোষালদের জমিদার হিসাবে স্বীকৃতি দেন। এরপরে ঘোষাল বাড়ির পুজোর রমরমা বাড়ে।

Advertisement

তবে কালের নিয়মে এই পুজোর জৌলুস এখন খানিক স্তিমিত। তবে পুজোর আচার অনুষ্ঠানে এখনও প্রাচীন ধারার অনুসারী বর্তমান প্রজন্ম। প্রতি বছর রথের দিন পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে এখানে। প্রথা অনুয়ায়ী, ওই দিন সভা করে পুজোর পরিকল্পনা স্থির হয়। কার কত চাঁদা তা নির্দিষ্ট হয়ে যায়। ওই দিনই কাঠামো পুজো হয়।

প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুটের মধ্যে। একটি কাঠামোয় তিনটি প্রকোষ্ঠ থাকে। দু’টি প্রকোষ্ঠে মহাদেব এবং শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি থাকে। ত্রিভুজের আকারে তিনটি চালচিত্রে তিনটি প্রকোষ্ঠ থাকে। সিংহের মাথা নৃসিংহের। এই পুজোর বৈশিষ্ট্য, দেবীর অস্ত্রধারণ বংশের কৃতী সন্তানেরা করে থাকেন। প্রতিপদের দিন বাড়িতে বোধন বসে ও চণ্ডীপাঠ হয়। স্থানীয় প্রাচীন হরিসভাটি ঘোষালদের দ্বার প্রতিষ্ঠিত। পুজো উপলক্ষে সেখান থেকে শ্যামসুন্দর ও রাধিকার পঞ্চ ধাতুর মূর্তি এনে পূজিত হয়। দশমীর পুজো শেষ হওয়া মাত্র পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা স্ত্রোত্রপাঠ শেষ করে অর্চনা করেন। তারপরে প্রতিমাকে বেদী থেকে উঠোনে নামানো হয়। পরিবারের মহিলারা বরণ ও প্রদক্ষিণ করেন প্রতিমা। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে প্রতিমা গঙ্গায় ভাসানো হয়।

Advertisement

ভাসান দিয়ে ফিরে এসে সকলে আদা, ছোলা ও নারকেল নাড়ু খান। পরিবারের সদস্য এবং বিসর্জনে যোগদানকারীরা মধ্যাহ্নভোজ সারেন। শুধু পুজো নয়, পুজো উপলক্ষে ঘোষাল বাড়িতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। পরিবারের সদস্য প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘‘বড়ে গোলাম আলি সাহেব থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা আমাদের বাড়ি পুজো উপলক্ষে অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন। এখনও পুজোর দিনগুলিতে গানের আসর বসে। নামী শিল্পীরা আসেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement