মণ্ডপে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখার ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
অষ্টমীর ভিড় ছাপিয়ে গেল নবমীতে। এমনই মনে করছেন চন্দননগরের বারোয়ারির কর্মকর্তারা। রাত যত বাড়ছে, চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখার ভিড় ততই বাড়ছে। মণ্ডপে মণ্ডপে তিল ধারণের জায়গা নেই। বাইরে দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন। আর এই ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের।
প্রতি বছর আলোর সাজ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন চন্দননগরে। রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজো হলেও চন্দননগরে উৎসব চলে পাঁচ দিন ধরে। ষষ্ঠী থেকে শুরু হওয়া উৎসব শেষ হবে দশমীতে শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে। চন্দননগরে দশমীতে সাধারণত এই শোভাযাত্রা দেখতেই ভিড় করেন মানুষ। সেই অর্থে মণ্ডপ এবং প্রতিমা দর্শনের শেষ দিন রবিবারই। শেষ দিনে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমছে চন্দননগরের রাস্তায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। নানা দিকে নানা আলোর সাজ দেখে অবাক হচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে ভিড় দর্শনার্থীদের। —নিজস্ব চিত্র।
মণ্ডপে মণ্ডপে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় বয়স্ক এবং ছোটদের খানিক অসুবিধাই হচ্ছে। তবে আট থেকে আশি, অনেকেই অসুবিধার কথা ভুলে পথে নেমেছেন। সকলের মুখে একটাই কথা, ‘‘আবার তো একটা বছর।’’ চন্দননগরের হালদারপাড়া আদি বারোয়ারির সহ-সম্পাদক অশোক সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন পুজোর সঙ্গে যুক্ত আছি। নবমীতে এত মানুষ দেখিনি। যা আশা ছিল তার থেকে অনেক বেশি দর্শনার্থীদের সাড়া পেয়েছি।’’
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখার ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
ভিড় সামলাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পুলিশ-প্রশাসন। বিভিন্ন রাস্তায় ‘নো এন্ট্রি’ করে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, রাস্তা না আটকালে চন্দননগর সচল রাখা মুশকিল হত। বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন গাড়ি করে আসা মানুষেরা। অনেককে বাধ্য হয়েই দূরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে প্রতিমা দর্শন করতে হচ্ছে।
মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
নবমীতে ভিড়ে ঠাসা রাস্তা দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। অ্যাম্বুল্যান্স আটকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল বলছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ স্বেচ্ছাসেবকেরা। নো এন্ট্রি করে যদিও চন্দননগর পুলিশ গাড়ি ঢোকা বন্ধ করেছে। না হলে চন্দননগর সচল রাখা মুশকিল হত। পুলিশের হিসাব বলছে, এখনও পর্যন্ত ১৫ লাখের বেশি লোক চন্দননগরে ভিড় করেছেন নবমীতে।