correctional home

মিলল জামিনদার, ৩০ বছর পরে জেলমুক্তি

আইনজীবীদের সূত্রে খবর, ১৯৮৯ সালে পারিবারিক বিবাদের জেরে মাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে বিমলের বিরুদ্ধে। ২০০৮-র মে মাসে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয় হুগলি জেলা আদালত।

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৪০
Share:

জেল থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন ছিল এক জন জামিনদারের। প্রতীকী ছবি।

জামিনদার না মেলায় প্রায় সাত মাস বাড়তি সময় জেলে আটকে থাকতে হল কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মুক্ত সিঙ্গুরের এক বাসিন্দাকে। ৩০ বছরের বেশি সময় জেলে কাটানোর পরে, গত শুক্রবার প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বছর সাতান্নোর ওই প্রৌঢ়।

Advertisement

আইনজীবীদের সূত্রে খবর, ১৯৮৯ সালে পারিবারিক বিবাদের জেরে মাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে বিমলের বিরুদ্ধে। ২০০৮-র মে মাসে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয় হুগলি জেলা আদালত। পরের বছর, কলকাতা হাই কোর্টে মুক্তির আবেদন জানান তিনি। চলতি বছরের এপ্রিলে তাঁকে মুক্তি দেয় হাই কোর্ট। জেল থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন ছিল এক জন জামিনদারের। কিন্তু জামিনদার না মেলায় মুক্তি অধরাই থেকে গিয়েছিল বিমলের।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মাস কয়েক আগে প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তাঁদের সচিব শুভ্রকান্তি ধর। তাঁর কাছে নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন বিমল। এর পরেই বিমলবাবুর মুক্তির প্রক্রিয়ায় গতি আসতে উদ্যোগী হন তিনি।

Advertisement

শুভ্রকান্তিবাবু বলেন, ‘‘আমাকে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, হাই কোর্ট মুক্তি দেওয়ার পরেও তিনি জেলবন্দি রয়েছেন। তাঁর মুক্তির বিষয়টি অযথা ঝুলে রয়েছে। আমি বিষয়টি রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের নজরে আনি। হুগলি জেলা আইনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা ওই ব্যক্তির দ্রুত মুক্তির জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেন।’’

বিষয়টি দেখার জন্য হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে নিয়োগ করা হয় আইনজীবী কুনাল দত্তকে। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে গত ১০ অক্টোবর নিয়োগ করা হয়। জামিনদার না পাওয়ায় ওই ব্যক্তির মুক্তি পাচ্ছিলেন না। আদালতের নির্দেশ ছিল, মুক্তির জন্য হুগলি আদালতে ২০০ টাকার বন্ড জমা দিতে হবে জামিনদারকে। আমি জামিনদার জোগাড় করে হুগলি জেলা আদালতে বন্ড জমা করাই। ওই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে শুক্রবার ওই ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন।’’

কুনালবাবু জানান, বিমলের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেলে থাকাকালীনই তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রায় ৩০ বছর জেলবন্দি ছিলেন বিমল। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি তাঁকে মুক্তি দেন। রায়ে বিচারপতি জানান, ঘটনার সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন অভিযুক্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ নিযুক্ত প্যারা লিগাল ভলান্টিয়ার ইন্দ্রনীল চৌধুরী জানান, প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকাকালীন গ্রন্থাগারে কাজ করতেন বিমল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement