—প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক লাইভ চলছিল ফেসবুকে। সেখানে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী, হাওড়া মধ্য কেন্দ্রের বিধায়ক অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে গ্রেফতার হলেন এক যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম এরশাদ সুলতান ওরফে শাহিন। সমাজমাধ্যমে অরূপের বিরুদ্ধে তিনি পুকুর বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ করেছিলেন।
গত ২৪ জুন নবান্ন সভাঘরে বিভিন্ন পুরসভার প্রশাসনিক কর্তা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং পদস্থ আমলাদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে হাওড়া পুরসভার পরিষেবা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেন তিনি। সরকারি জমি দখল, সেই জমি বিক্রি করা, বহিরাগতদের ‘বসানো’-সহ নানা কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন। ওই বৈঠকে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে লাইভ সম্প্রসারণ হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ। তাঁর বিরুদ্ধেই শিবপুর মোল্লা পাড়ার বাসিন্দা এরশাদ ‘কমেন্ট’ করেন সমাজমাধ্যমে। তার পরেই এই গ্রেফতারির ঘটনা।
এরশাদ নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করেছেন। ৩৪ বছরের ওই যুবক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘অরূপ রায় হাওড়া পুরসভার ২৭ এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুকুর বুজিয়ে ফেলেছেন।’’ পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ওই লেখা দেখে শিবপুর থানায় ওই দিনই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হাওড়া মধ্য বিধানসভা এলাকার তৃণমূল নেতা সুশোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ৩০ জুন, গত রবিবার এরশাদকে শিবপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যুবকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। হাওড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরশাদের পরিবার জানিয়েছে, তারা এই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। ধৃতের বাবা সুলতান মামুদ আলম বলেন, ‘‘এ ভাবে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি। আমার ছেলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে সব সময়। ও জামাকাপড় তৈরির কাজ করে। কোনও ঝামেলায় থাকে না। কাজের পাশাপাশি সক্রিয় ভাবে তৃণমূল করে ও।’’
অন্য দিকে, অভিযোগকারী সুশোভনের মন্তব্য, ‘‘এক জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়াই কুৎসা করা অপরাধ। এতে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে ওঁকে।’’ মন্ত্রী অরূপ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি নেতা ওমপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বিরোধীদের কন্ঠরোধ করা হয়। এ বার তৃণমূল তাদের কর্মীদেরও জেলে পাঠাচ্ছে। এ রাজ্যে মানুষের বাক্স্বাধীনতা হরণ করছে শাসক।’’