—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বকেয়া মজুরির টাকা রাজ্য সরকারই দেবে বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘোষণার পরে এ সংক্রান্ত প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে দুই জেলায় (হাওড়া ও হুগলি)। প্রতিটি ব্লককে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে বলে হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। হুগলিতে শুক্রবার থেকে শ্রমিকদের খসড়া তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি যাচাইকরণ শুরু হল।
দু’বছর ধরে এ রাজ্যে ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ বন্ধ। এ নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণা করেন। শ্রমিকদের যত দিনের মজুরি বকেয়া রয়েছে, তার ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার (এফটিও) তৈরি করে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত আগেই কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছিল। তার ভিত্তিতেই সরাসরি মজুরির টাকা জবকার্ডধারীদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে চলে আসার কথা। কিন্তু তা হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সেই সব এফটিও যে সব জবকার্ডধারীর নামে করা হয়েছে সেগুলি ফের নতুন করে যাচাই করে তবেই রাজ্য তাঁদের মজুরির টাকা দেবে। ওই প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ত্রুটি রাখতে চায় না রাজ্য সরকার। এমন ভাবে তা যাচাই করা হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারেন।’’
কী কী যাচাই করা হবে?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এফটিও-তে যাঁদের নাম আছে, তাঁদের জব কার্ড, আধার কার্ড, ফোন নম্বর এবং ব্যাঙ্ক আকাউন্ট নম্বর খতিয়ে দেখা হবে। যতদিন তাঁরা কাজ করেছেন বলে বলা হয়েছে, বাস্তবে সেটা হয়েছে কি না, সেটাও দরকার হলে খতিয়েদেখা হবে।
হুগলিতে ওই যাচাইয়ের সময়সীমা ধরা হয়েছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পঞ্চায়েতপিছু তিন থেকে চারটি দল তৈরি করে সেই কাজ শুরু হয়েছে। যাচাইপর্ব শেষ করে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত মজুরি প্রদানের তালিকা তৈরি করতে হবে ব্লক প্রশাসনকে। আগামী ১৯ ফেব্রয়ারির মধ্যে ব্যাঙ্ক-ভিত্তিক অর্থ প্রদানের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। জেলায় জবকার্ড রয়েছে ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার ১৭৬ জনের।
হুগলি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখ থেকে এই জেলায় শ্রমিকদের মজুরি, সরঞ্জাম ইত্যাদি খাতে ২৭৫ কোটি টাকা বকেয়া। তার মধ্যে অদক্ষ শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের বকেয়া মজুরি মেটানো হবে।” তিনি জানান, কাজটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে মহকুমাপিছু মহকুমাশাসক তদারকির সার্বিক দায়িত্বে থাকছেন। তাঁর উপরে থাকছেন জেলার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক। বিষয়টি নিয়ে প্রচার এবং সচেতনতারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে।
হাওড়ার একাধিক ব্লক প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে কাজটি সময়সাপেক্ষ। অথচ, যাচাইয়ের কাজ দ্রুত করার জন্য রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণে ব্লকের কর্মী ও অফিসারদের সঙ্গে পঞ্চায়েতের কর্মীদেরও যুক্তকরা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সময় অল্প হলেও যতটা সম্ভব নিখুঁত ভাবে যচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। সেই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনগুলিকে।