Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির জন্য কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে, ঘোষণা করলেন মমতা

শুক্রবার সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামে সন্তোষী মাতার মন্দিরে পুজো দেন মমতা। নিজের হাতে শিশুদের প্রসাদ বিতরণ করলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২২ ২৩:০৪
Share:

ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের পর প্রথম বার হুগলির সিঙ্গুরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকেরা জমি ফেরত পাওয়ার পর সিঙ্গুরে যে মন্দির গড়েছিলেন তিনি, সেই ‘সন্তোষী মাতা’র মন্দিরে গিয়েই পুজো দিলেন মমতা। এর পর সভামঞ্চ থেকে সিঙ্গুরে কৃষি ও শিল্পের এক সঙ্গে বিকাশের কথা বললেন তিনি। ঘোষণা করলেন, সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি (কৃষিভিত্তিক শিল্প) গড়ার কথা ভাবছেন তিনি। এরই পাশাপাশি, উত্তরপাড়ায় কোচ ফ্যাক্টরি আর ডানকুনিতে ফ্রেড করিডরের ঘোষণাও করলেন মমতা। এই ভাষণের পরেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এক যোগে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম।

Advertisement

শুক্রবার সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামে সন্তোষী মন্দিরে পুজো দেন মমতা। নিজের হাতে শিশুদের প্রসাদ বিতরণ করলেন তিনি। এর পরেই বাজেমেলিয়া হাসপাতালের মাঠে তৈরি অস্থায়ী সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই শীতলা মন্দিরে প্রায়ই আসেন তিনি। সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের সময় যখন অনশনে বসেছিলেন, তখন থেকেই তিনি সন্তোষীর ব্রত শুরু করেছিলেন। কৃষকেরা জমি ফিরে পেলে একটা ছোট্ট মন্দির বানানোর কথাও ভেবেছিলেন মমতা। সেই কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বেচারাম মান্নাকে বলেছিলাম, আমার ছোট জায়গা লাগবে। মা আমার কথা রেখেছেন। কৃষি জমি আন্দোলনে জয় এসেছে। মানুষ জমি ফেরত পেয়েছে। আমি মানত করেছিলাম, এখানে মন্দির করব। তার পর ২০১৯ সালে এই মন্দির তৈরি হয়েছে।’’

এর পরেই সিঙ্গুর থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে কামারকুণ্ডুর রেল ওভারব্রিজ উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই সিঙ্গুরের উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আগামী দিনে কোটি কোটি টাকার শিল্প আসবে এই জমি আন্দোলনের মাটিতে।’’ তাঁর সংযোজন, ডানকুনি থেকে বর্ধমান পর্যন্ত শিল্পের সম্ভাবনা তৈরির লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। ‘ডেডিকেটেড রেললাইন’ তৈরি করা হবে বলে জানান মমতা। তিনি আরও জানান, ওড়িশার মতো দিঘাতেও একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘দিঘায় গিয়ে অনেকেই পুজো দিতে চান। তাই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘাতেও একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করা হবে।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত দশ বছর ধরেই শিল্প আর অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির কথা শুনে যাচ্ছি!’’ বস্তুত, কামারকুণ্ডুর রেল ওভারব্রিজের প্রকল্পে রেল ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে কাজ করেছে। ওই ওভারব্রিজ রেলের কোনও প্রতিনিধি ছাড়া শুধু মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করতে পারেন না, হুগলির জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে এমনটা জানিয়েছে রেল। তার পরেও শুক্রবার মমতা একা ওই ওভারব্রিজ উদ্বোধন করায় শমীক বলেন, ‘‘এই ধরনের ওভারব্রিজ তৈরি হলে তাতে টাকা দেয় রেল। সেটা ভারত সরকারের টাকা। অন্য দিকে, অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করে রাজ্য সরকার। যে প্রকল্পের উদ্বোধন আজ মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, নীতিগত ভাবে তা তিনি করতে পারেন না।’’

সিঙ্গুরে কৃষিভিত্তিক শিল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘চালাকি করে, মিথ্যাচার করে বেশি দিন চালানো যায় না। সিঙ্গুরে কী অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি হবে! এগ্রিকালচারটাই তো নষ্ট হয়ে গেছে সারা রাজ্যে। কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। আলু চাষিরা আলুর দাম পাননি। দক্ষিণবঙ্গে আলু চাষ করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন চাষিরা। এখন উনি বলছেন, কৃষিভিত্তিক শিল্প!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement