হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথে থাকা তিনটি আরএফআইডি খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় কার্যত তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে ওই বুথগুলির কাজ। ফাইল চিত্র।
হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথে থাকা তিনটি রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিভাইস (আরএফআইডি) খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় কার্যত তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে ওই বুথগুলির কাজ। অত্যাধুনিক ওই যন্ত্র বিকল হওয়ায় প্রি-পেড ট্যাক্সি পেতে যাত্রীরা তো সমস্যায় পড়ছেনই। পাশাপাশি, বুথে কত ট্যাক্সি ঢুকছে বা বেরোচ্ছে, তার ঠিক তথ্য কম্পিউটারে থাকছে না। আরও অভিযোগ, কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা যাত্রীদের সাহায্য করলেও অনেক সময়েই ট্যাক্সিচালকেরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে ট্যাক্সি পাওয়ার জন্য যাত্রীদের হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সে কিংবা নতুন কমপ্লেক্সের প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথের সামনে বহুক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যা চলছে গত ছ’মাস ধরে। সমস্যার সমাধানে নতুন করে দরপত্র ডেকে যন্ত্রগুলি কেনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
২০১৩ সালে হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সের প্রি-পেড ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে দু’টি ও নতুন কমপ্লেক্সের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে একটি আরএফআইডি যন্ত্র বসানো হয়। ওই যন্ত্রগুলিনিয়ন্ত্রণ করত ট্র্যাফিক পুলিশ। ট্যাক্সিগুলিতে লাগানো হয় বিশেষ ধরনের স্টিকার। আরএফআইডি যন্ত্রের কাজ হল, প্রি-পেড স্ট্যান্ডে ট্যাক্সি এসে দাঁড়ালেই তাতে সাঁটা ওই স্টিকারের মাধ্যমে গাড়িটির নম্বর উঠে যায় যন্ত্রে। যাত্রীরা তাঁদের গন্তব্য অনুযায়ী টিকিট কাটলে কম্পিউটারে ওঠা পর পর ট্যাক্সির নম্বরের ভিত্তিতে তা তৈরি হয়ে যায়। টিকিটের দু’টি কপি দেওয়া হয় যাত্রীকে, আর একটি কপি ট্যাক্সিচালককে। নম্বর অনুযায়ী গন্তব্যের টিকিট তৈরি হওয়ায় চালকেরা যাত্রী প্রত্যাখ্যান করতে পারেন না। যাত্রীরাও সহজে ট্যাক্সি পেয়ে যান।
যন্ত্রগুলি খারাপ হওয়ায় সমস্যা কোথায় হচ্ছে? হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন টিকিটে গন্তব্যস্থলের নাম দেখে কোন ট্যাক্সি সেখানে যাবে, তা খুঁজে বার করে সেই নির্দিষ্ট গাড়ির নম্বর লিখে দিতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। ফলে, হাওড়া ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীদের এই বিষয়টি নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। হাতে নম্বর লেখার ফলে থাকছে না গাড়ি এবং চালকের বিস্তারিত তথ্য। শুধু তা-ই নয়, কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। দীর্ঘ লাইন পড়ছে বুথগুলির সামনে।
পুলিশি সূত্রের খবর, আরএফআইডি যন্ত্রগুলি মেরামতির জন্য পাঠানো হলেও সেগুলি শেষ পর্যন্ত সারাই করা যায়নি। অগত্যা সমাধান হিসেবে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজ়ায় যে সংস্থা এই যন্ত্র সরবরাহ করেছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নতুন আরএফআইডি যন্ত্রের জন্য দরপত্র ডাকা হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই ওই যন্ত্র চলে আসবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।’’