পানীয় জল প্রকল্পের পাইপ লাইনের কাজ চলছে। ছবি: সুশান্ত সরকার
বহু প্রতীক্ষিত পানীয় জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলাগড়ে। নবান্নের দাবি, এই প্রকল্পে আর্সেনিকমুক্ত পরিশুদ্ধ পানীয় জল পাবেন বলাগড় এবং পার্শ্ববর্তী পান্ডুয়া ব্লকের মানুষ। দুই ব্লকই ‘আর্সেনিক কবলিত’ বলে চিহ্নিত।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫২০ কোটি ৮২ লক্ষ টাকায় প্রকল্পটি রূপায়ণ করবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি (পিইএচই) দফতর। দু’টি ব্লক মিলিয়ে ২৮৬টি গ্রামে বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছবে বিনামূল্যে। সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি পরিবার এর সুফল পাবে।
রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় জানান, এই প্রকল্পে গঙ্গার জল তুলে শোধন করে প্রতিদিন ৬ কোটি ১০ লক্ষ লিটার বিশুদ্ধ জল ৪৯টি জলাধারের মাধ্যমে বলাগড় ও পান্ডুয়া ব্লকে সরবরাহ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে অপরিশোধিত জল উত্তোলন কেন্দ্র, শোধনাগার, সংবহন পাইপ বসানো, জলাধার তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আশা করছি ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে প্রকল্পটি চালু করা যাবে।’’
হুগলি জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু নানা কারণে এত দিন কাজ আটকে ছিল। দুই ব্লকেই পানীয় জলের জন্য সাধারণ মানুষ পাড়ার নলকূপের উপরে নির্ভর করেন। কিছু জায়গায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নলকূপ রয়েছে। আর্সেনিকের উপস্থিতির কারণে বছর কয়েক আগে প্রশাসনের তরফে বেশ কিছু নলকূপ ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাতে পানীয় জলের জন্য সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত চালুর দাবি বাড়ছিল। অবশেষে কাজ শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষ খুশি।
ওই প্রকল্পের জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি অবশ্য চূড়ান্ত হয়নি। বুধবার এ নিয়ে জেলাশাসক দীপপ্রিয়া পি’র সঙ্গে বৈঠক করেন পান্ডুয়ার বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না দে নাগ এবং বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, সংশ্লিষ্ট দফতরের ইঞ্জিনিয়াররাও বৈঠকে ছিলেন।
কাজ যাতে দ্রুত গতিতে এগোয়, বৈঠকে সে ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে আর্জি জানান রত্নাদেবী এবং মনোরঞ্জনবাবু। মনোরঞ্জনবাবু জানান, জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনের মাধ্যমে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মন্ত্রী পুলকবাবু বলেন, ‘‘জমিদাতাদের সরকারি অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে।’’