ফাঁকা: শুক্রবার দুপুরে সিঙ্গুরের বারুইপাড়া স্টেশন সংলগ্ন মাঠে লকেটের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।
কর্মসূচির নাম ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’। ঠিকানা—সিঙ্গুর।
কথা ছিল বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় চাষিদের সমস্যা, অভাব-অভিযোগ শুনবেন। কিন্তু কোথায় কী!
শুক্রবার দুপুরে ওই কর্মসূচিতে মিনিট কুড়ির জন্য সিঙ্গুরের বারুইপাড়া স্টেশন সংলগ্ন মাঠে এলেন লকেট। সাত-আট মিনিট রাজনৈতিক বক্তব্য পেশ করলেন। তারপর চাষিদের জন্য খিচুড়ি রান্না হতে দেখে সেখানে গিয়ে খুন্তি নেড়ে বিদায় নিলেন! সাংসদের ভূমিকায় অবাক চাষিরা। কোনও সমস্যার কথা তাঁরা জানাতে পারলেন না।
গত লোকসভা নির্বাচনে এই সিঙ্গুর তৃণমূলকে ছাপিয়ে লকেটকে ভোট দিয়েছিল। অথচ, এ দিন লকেট তাঁদের সঙ্গে কথা না-বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চাষিরা। মাঠে বসার ব্যবস্থা হয়েছিল। বেশি চাষি অবশ্য আসেননি। তাঁদের মধ্যে মানিক পোড়েলের খেদ, ‘‘দিদি একজন কৃষকেরও অভিযোগ শুনলেন না। তাঁর মতো বক্তব্য পেশ করে চলে গেলেন। তা হলে কিসের জন্য এসেছিলেন? ভোটের রাজনীতি করতে? কৃষকদের কথা শুনতে উনি আসেননি।’’
শ্যামল পাল নামে আর এক চাষি বলেন, ‘‘চাষ করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা বলতে এসেছিলাম। সারের দাম বেড়েই চলেছে। যাতে সারের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়, সে কথা বলতে এসেছিলাম। উনি তো চলে গেলেন।’’
চাষিদের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি, এ কথা মানতে চাননি লকেট। তাঁর দাবি, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা রটানো হচ্ছে। সিঙ্গুরে গিয়ে গ্রামবাসী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনেছি।’’ তবে, বিজেপির স্থানীয় নেতা সঞ্জীব দে কবিরাজ বলেন, ‘‘২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসছেন। সেই বিষয়ে জরুরি বৈঠক থাকায় সাংসদ চাষিদের সঙ্গে কথা না-বলেই চলে গিয়েছেন।’’
সে ক্ষেত্রে অন্য কোনও দিন কেন এই কর্মসূচির আয়োজন করা হল না, সে প্রশ্নও তুলেছেন কিছু চাষি। তাঁরা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতির জন্য দলীয় সাংসদের ব্যস্ততা থাকতেই পারে। সে ক্ষেত্রে ওই সফরের পরেও কর্মসূচি আয়োজন করা যেত। তা না করে আগে থেকে কর্মসূচির কথা ফলাও করে প্রচার করে শেষমেশ তাঁদের কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হল না।
লকেট এ দিন তাঁর সাত-আট মিনিটের বক্তৃতায় কৃষকদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কথা বলেন। ফের একবার রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরে শিল্পায়নের আশ্বাস দেন।