জাঙাল রোডে প্রায়ই দেখা মিলছে এমন ভারী গাড়ির। নিজস্ব চিত্র ।
মাস তিনেক আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয়েছে। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারাপুর থেকে সিঙ্গুর ব্লকের বাগডাঙা-ছিনামোড় ও নসিবপুর পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে যাওয়া ওই ‘জাঙাল রোড’ ঠিক রাখতে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে জন্য নসিবপুর ও পিয়ারপুরে পৃথক ভাবে ওই রাস্তার দু’প্রান্তে পোঁতা হয় লোহার বিম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কিছু অসাধু লোকের মদতে এর মধ্যেই বিম উপড়ে ফেলে ভারী গাড়ি যাতায়াত শুরু হয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ গাড়ি যাচ্ছে ওই পথের ধারে বিভিন্ন কারখানায়। ফলে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কটি।
রাস্তাটি উত্তর রাজ্যধরপুরে দিল্লি রোডের পাশ থেকে দিয়াড়ায় রেললাইনের ধার পর্যন্ত বিস্তৃত। লম্বায় আড়াই কিলোমিটার। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর বক্তব্য, ঢালাই রাস্তা হওয়ায় তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি মিটেছে। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের জন্য রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা জানান, রাজ্যধরপুরের দিকে রাস্তার বিম তুলে ফেলা হয়েছে। দিল্লি রোড হয়ে বৈদ্যবাটী থেকে ওই রাস্তায় ঢুকে পড়ছে গাড়ি। কারখানা থেকে ফিরতি পথে একই ভাবে দিল্লি রোড ধরছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, ভারী গাড়ি চলাচল অবিলম্বে বন্ধ না করলে রাস্তার দফারফা হবে।
শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মণি মান্না সামুইয়ের দাবি, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খতিয়ে দেখে অভিযোগ সঠিক হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিজন বেসরা জানান, অভিযোগ সত্যি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ফের দ্রুত লোহার বিম পোঁতার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে রাস্তাটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের তদারকিতে রাস্তাটি হয়েছে। যে ঠিকাদার সংস্থা কাজটি করেছে, আগামী পাঁচ বছর রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদেরই। যদিও এ ভাবে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি ঢোকালে রাস্তাটি টিকবে কত দিন, এই প্রশ্ন তুলেছেন ওই সংস্থার কর্তারাও। সে ক্ষেত্রে ভাঙা রাস্তা মেরামত করে পোষাবে না বলেও তাঁরা মনে করছেন।
ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তা জানান, সরকারি নির্দেশ মতো ১০ টনের বেশি ভারী গাড়ি চলাচল আটকাতে রাস্তার দু’প্রান্তে লোহার বিম পোঁতার পাশাপাশি এ নিয়ে বোর্ডও লাগানো হয়েছে। যদিও ওই নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্রই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতররের ইঞ্জিনিয়ারকে সেখানে নিয়ে গিয়ে দেখানোর পরে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই রাস্তায় বর্ষার সময় জল উঠে যায়। দফতরের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তা তৈরি হয়েছে। জল জমলেও রাস্তা পুরোপুরি নষ্ট হবে না। যে জায়গা নষ্ট হবে, সেটুকু সহজেই মেরামত করা যাবে। কিন্তু ভারী গাড়ি ঢুকে রাস্তার ক্ষতি করলে মুশকিল।’’