জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ। ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরের বিশালক্ষীতলায়। নিজস্ব চিত্র
নলবাহিত জলের সংযোগ অনেক বাড়িতেই হয়েছে। কিন্তু,জল পড়ে কই!
পানীয় জলের সমস্যা হুগলির দেবানন্দপুরে ছিলই। বাড়াবাড়ি গরমে তা কার্যত হাহাকারে পৌঁছেছে। বেড়েছে ক্ষোভের পারদ। জলের দাবিতে শুক্রবার দেবানন্দপুর রোড অবরোধ করেন এলাকাবাসী। বিকেল গড়িয়েও অবরোধ চলে। পঞ্চায়েত এবং প্রশাসন জানিয়েছে, জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। তবে, সঙ্কটের আশু সমাধানের আশ্বাস মেলেনি।
মহকুমা (সদর) প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘জল সরবরাহের নতুন পাইপ লাইন বসানো চলছে। কাজ মেটা পর্যন্ত সময় দিতেই হবে।’’
দেবানন্দপুর পঞ্চায়েতের বিশালাক্ষীতলা, মালিকপাড়া, চন্দনপুরের প্রভৃতি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই জলের সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে এ নিয়ে গ্রামের মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক অসিত মজুমদার। দিন কয়েক আগে জলপ্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তার সঙ্গে হাতাহাতিও হয় গ্রামবাসীর।
শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে অবরোধ তোলার অনুরোধ বিফলে যায়। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পীযূষ ধর ঘটনাস্থলে গেলে, তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। ঘণ্টা দুয়েক পরে বিধায়ক অবরোধকারী এক মহিলাকে ফোন করে অবরোধ তোলার আর্জি জানান। বিধায়ককে ঘটনাস্থলে এসে কথা বলার দাবি জানান মহিলা। বিধায়ক জানান, অবরোধ না তুললে, যাবেন না। অবরোধকারীরা পাল্টা জানান, সে ক্ষেত্রে তাঁরাও অবরোধ চালিয়ে যাবেন। অভিযোগ, বিধায়ক অবরোধকারীদের বলেন, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। এতে পরিস্থিতি আরও তেতে ওঠে।
বিধায়ক বলেন, ‘‘জলের নতুন পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। অবরোধ করলে সমস্যার সমাধান হয় না। বিজেপির ইন্ধনে অবরোধ হচ্ছে।’’ অবরোধকারীদের ক্ষোভ, জলকষ্টে তিতিবিরক্ত সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমেছেন। বিধায়ক তাতে রাজনীতি মেশাচ্ছেন। বিজেপি নেতা সুরেশ সাউয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘জল না-পেয়ে মানুষ পথে নামছেন। জলের ব্যবস্থা না করে বিধায়ক বিজেপির ভূত দেখছেন।’’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছর খানেক আগে বাড়ি বাড়ি ট্যাপকল বসলেও, গত কয়েক মাস জল পড়ছে না। ট্যাপকল বসানোর সময় রাস্তা থেকে বেশিরভাগ নলকূপ খুলে নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও বিগড়েছে। হাতেগোনা যে কয়েকটি নলকূপ রছে, সেখানে ভিড় জমছে। এক যুবক বলেন, ‘‘প্রশাসন আশপাশের পুরসভা থেকে জলের গাড়ি পাঠালেও কিছুটা সুরাহা হয়। সেই উদ্যোগ কোথায়!’’
স্থানীয় বাসিন্দা মানস বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভোটের সময় নেতারা এসে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু, জল আসে না। অসহনীয় অবস্থা।’’ মিঠু দাস নামে
এক মহিলার ক্ষোভ, ‘‘মানুষকে জল দেওয়া পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের প্রাথমিক দায়িত্ব। অথচ, আমাদের
হাল দেখুন!’’