Chandannagar

চন্দননগরের আলো হাবে দোকান বাইরের শিল্পীকেও

২০১৭ সালের পয়লা জুন তারকেশ্বরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দননগরে আলো হাব তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন।

Advertisement

সুদীপ দাস

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৬
Share:

দোকান ঘরের চাবি হাতে আলোকশিল্পীরা। সোমবার। ছবি: তাপস ঘোষ

চন্দনগরের আলোকশিল্পীদের জন্য ‘মুখ্যমন্ত্রীর উপহারে’ ভাগ বসল!

Advertisement

আলোর শহর চন্দননগরে গড়ে উঠেছে আলো হাব। সোমবার এখানে কয়েকটি দোকানঘরের চাবি তুলে দেওয়া হল শিল্পীদের হাতে। দেখা গেল, চন্দননগরের বাইরের তিন জনও দোকান পেয়েছেন। ফলে, গোড়াতেই স্থানীয় শিল্পীরা ওই প্রকল্প সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘চন্দননগরের আলো ব্যবসায়ীরা না এলে আমরা তো আর জায়গা ফাঁকা রাখতে পারি না। তাই বাইরের কোনও প্রতিভাবান আলোকশিল্পী এলে তাঁদের ঘর দেওয়া হবে। আসলে চন্দননগরে হলেও এই আলো হাব গোটা বাংলার।’’

Advertisement

২০১৭ সালের পয়লা জুন তারকেশ্বরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দননগরে আলো হাব তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী এই প্রকল্প চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের জন্য ‘উপহার’। সেই মতো শহরের কেএমডিএ পার্কেহাব তৈরি হয় ১৪ কোটি টাকায়। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীউদ্বোধন করেন।

তিন তলা ভবনের প্রথম দু’টি তলে ৩০টি করে মোট ৬০টি দোকানঘর রয়েছে। প্রত্যেকটির আয়তন ৩০২ বর্গফুট। তিন তলায় ‘উৎকর্ষ বাংলা’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত এলএইডি-র মাধ্যমে বিভিন্ন কারুকাজ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এখানে। প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্র দেওয়া হবে। উদ্বোধনের প্রায় এক বছর পরে সোমবার ১৩ জনের হাতে দোকানঘরের চাবি তুলে দেওয়া হল। হাবে নয়, ওই অনুষ্ঠান হল সেখান থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে শহরের জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সভাগৃহে। বিধায়ক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হুগলির জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি, চন্দননগরের মহকুমাশাসক অয়ন দত্তগুপ্ত, মেয়র রাম চক্রবর্তী, পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু প্রমুখ।

জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রথম ধাপে আমরা যে দরপত্র ডেকেছিলাম, তাতে মোট ১৫ জন দোকানঘর নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় এক জনের আবেদন বাতিল হয়। বাকি ১৪ জনের মধ্যে সোমবার এক জন আসতে পারেননি। ১৩ জনের হাতে দোকানঘরের চাবি তুলে দেওয়া হল। ধাপে ধাপে বাকি দোকানঘরের চাবি শিল্পীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’

দোকানের চাবি পেয়ে ভদ্রেশ্বরে বাসিন্দা সুমন পাল বলেন, ‘‘এত দিন বাড়িতে আলোর কাজ করতাম। ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে হাবে নতুন দোকানঘর পেয়েছি। মাসিক ভাড়া আড়াই হাজার টাকা।’’ নদিয়ার কল্যাণীর আলো ব্যবসায়ী শম্ভু সাহাও হাবে একটি দোকানঘর নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘চন্দননগর বলে কথা। এখানে আলোর ব্যবসা করলে ভালই চলবে বলে আশা করছি।’’

চন্দননগরের প্রবীণ আলোকশিল্পী কাশীনাথ দাস বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে হাবে ঘর নেওয়ার মতো আর্থিক পরিস্থিতি আমার ছিল না। স্থানীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ঘর নেওয়ার জন্যে ধার্য অর্থের পরিমাণ কমানোর আবেদন করেছিলাম। কোনও জায়গা থেকেই উত্তর আসেনি। তাই দরপত্র জমা দিতে পারিনি। এখন শুনছি, চন্দননগরের বাইরের শিল্পীদেরও ঘর দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। আমাদের কিছু করার নেই।’’ অন্য এক শিল্পীর বক্তব্য, ‘‘মূল চন্দননগর শহরে আমাদের বাজার যথেষ্ট জমজমাট। তাই, কেএমডিএ পার্কে তৈরি হাবে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই।’’a

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement