কাজে ব্যস্ত চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র।
শারদোৎসবের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন অন্ধকার নেমে আসছে চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের মুখে। দর্শকদের চমক দেওয়ার জন্য নতুন নতুন ভাবনা আছে। তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজও চলছে পুরোদমে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও পথের কাঁটা করোনা-পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় এ বারও বাজেট ছাঁটছে বহু পুজো কমিটি। আর তাতে জোরালো ধাক্কা খেয়েছেন চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা।
চন্দননগরের তালডাঙা, বিদ্যালঙ্কা, পঞ্চাননতলা জুড়ে আলোক শিল্পীদের পরীক্ষাগার। প্রতি বছরই পুজোর আগে দর্শকদের চমক দেওয়ার কথা মাথায় রেখে তৈরি হয় নানা রকমের আলো। সৃষ্টির সেই ভাবনায় মিশে থাকে রাজনীতি, সংস্কৃতি, খেলাধুলো ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রও। এ বার যেমন ‘দুয়ারে সরকার’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘স্বাস্থ্য সাথী’-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ভারতের সাফল্য আলোকসজ্জার মধ্যে দিয়ে তুলে ধরবেন শিল্পীরা। পাশাপাশি, অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী ক্রীড়াবিদ নীরজ চোপড়াকেও তুলে ধরা হবে ওই আলোকসজ্জায়। শিশুদের জন্য থাকছে ডিজনিল্যান্ড। কিন্তু সব পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে অতিমারি।
চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের অনেকেই মণ্ডপে আলোকসজ্জার বরাত পাননি। করোনার প্রথম বছরেও এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেছিলেন তাঁরা। এ বার করোনার টিকা বাজারে চলে এলেও পরিস্থিতির তেমন একটা বদল হয়নি। তবে গত বার যে সব পুজো নমো নমো করেই সেরেছিলেন উদ্যোক্তারা, তাঁরা এ বার কিছুটা বাজেট বাড়িয়েছেন বলে জানাচ্ছেন আলোকশিল্পীদের একাংশ। শিল্পী বাবু পাল বলছেন, ‘‘এ বার সে ভাবে আলোর চাহিদা নেই। বাজেট কমিয়ে পুজো করছে অনেক বারোয়ারি। আবার কেউ কেউ সরকারের দেওয়া অনুদানেই পুজো সেরে নিতে চাইছেন। তাই থিমের পুজো কলকাতার বাইরে জেলায় যে ভাবে হত, তা এ বার হচ্ছে না।’’
শহরের অন্য আলোকশিল্পীদেরও অবস্থা একই। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার জন্য গত বছর যে আলোকসজ্জা তৈরি হয়েছিল তা এখনও পড়ে রয়েছে। কারণ গত বার শোভাযাত্রা বন্ধ ছিল। প্রতি বার চন্দননগরের বিখ্যাত শোভাযাত্রার জন্য নতুন নতুন ভাবনার আলোকসজ্জা তৈরি হয়। এ বারও শোভাযাত্রা হবে কি না তা নিশ্চিত নয়। তাই আলোকশিল্পীদের কপালে ক্রমশ গভীর হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ।