শনিবার আইনি পরামর্শ দিতে কোন্নগরে আসেন কলকাতা হাই কোর্ট, হুগলি জেলা আদালত এবং শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা। —নিজস্ব চিত্র।
জমি-বাড়ি বা খাজনা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি পরামর্শদাতারা এ বার হাজির ঘরের কাছেই। সাধারণ মানুষের জন্য এমন পরিষেবার বন্দোবস্ত করল হুগলির কোন্নগরের এক গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রায় দুয়ারে সরকারের ধাঁচে এ বার আইনি পরিষেবা পাওয়া যাবে প্রতি মাসের ১ দিন। শনিবার যা প্রথম শুরু হল হুগলিতে।
কোন্নগরের তৃণমূল পরিচালিত কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে স্থানীয়দের ‘দুয়ারে’ হাজির হয়েছেন আইনজীবীরা। শনিবার তাঁদের আইনি পরামর্শ দিতে এলাকায় আসেন কলকাতা হাই কোর্ট, হুগলি জেলা আদালত এবং শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা। সকাল থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আইনি পরিষেবা দিতে হাজির ছিলেন মোট দশ জন আইনজীবী। কানাইপুর পঞ্চায়েত প্রধান আচ্ছালাল যাদব জানিয়েছেন, প্রতি মাসের শেষ শনিবার স্থানীয়দের দুয়ারে পৌঁছবে আইনি পরিষেবা। তাঁর কথায়, ‘‘আজ (শনিবার) থেকে চালু হয়েছে দুয়ারে আইনি পরিষেবা। সাধারণ মানুষকে আইনি সুবিধা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের আইনজীবীরা কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এসেছেন। জমি-বাড়ি বা খাজনা সংক্রান্ত বিষয় হোক বা অন্যান্য একাধিক আইনি জটিলতার থেকে সহজে নিস্তার পেতে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে।’’
লোক আদালত থাকা সত্ত্বেও আবার দুয়ারে আইনি পরিষেবা চালু করার কতটা তাৎপর্যপূর্ণ? এ প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী অরুণকুমার আগরওয়াল বলেন, ‘‘কারও মামলা ঝুলে থাকলে বা দীর্ঘ দিন ধরে মামলা চললে তা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য লোক আদালত রয়েছে। দুয়ারে আইনি পরিষেবার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে মানুষজনকে শুধুমাত্র আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এই আইনি পরামর্শের জেরে কাউকে আদালতে যেতে হলে সেখানে যাতে বিনা ব্যয়ে তাঁদের কাজ হয়, তা নিয়েও লিগাল সেলের তরফে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।’’
যদিও দুয়ারে আইনি পরিষেবা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি জেলার বিজেপি নেতা পঙ্কজ রায়। তিনি বলেন, ‘‘আইন পকেটে নিয়ে ঘুরছে তৃণমূল। এক বছর আগে বিজেপির এক নেত্রীর ওপর কোন্নগরে আক্রমণ হয়েছিল। সে ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যেখানে কোনও আইনই নেই, সেখানে তারা আইনি পরামর্শ দিচ্ছে। মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া তৃণমূলের কোনও কাজ নেই। তারা নিজেরাই আইন ভাঙে। তাদেরই আইনি পরামর্শ দরকার। যে দিন সরকার চলে যাবে, সে দিন দেখব, কার কাছে গিয়ে আইনি পরামর্শ নেবে তারা!’’