Kazi Nazrul Islam

Kazi nazrul islam: নজরুলের হারানো গানের খাতা উত্তরপাড়ার সংগ্রহশালায়

নজরুলের হারিয়ে যাওয়া লেখা, বই, গানের উপরে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন উত্তরপাড়ার বাসিন্দা অরিন্দম সাহা সরদার।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

রত্ন: খাতার প্রথম পাতা ।

আকাশবাণী থেকে একবার গান গেয়ে ফেরার পথে নিজের গানের খাতা হারিয়ে ফেলেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তা খুঁজে পেতে কবি এবং তাঁর গানের স্বরলিপিকার জগৎ ঘটক কাগজে বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দিয়েছিলেন। সোমবার, কবির ৪৬তম প্রয়াণ দিবসে সেই খাতা প্রকাশ্যে এল হুগলির উত্তরপাড়ার ‘নজরুল ভান্ডার’-এ।

Advertisement

নজরুলের হারিয়ে যাওয়া লেখা, বই, গানের উপরে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন উত্তরপাড়ার বাসিন্দা অরিন্দম সাহা সরদার। নিজের ফ্ল্যাটে কবির সৃষ্টিকে নিয়ে সংগ্রহশালা (নজরুল ভান্ডার) গড়ে তুলেছেন ওই নজরুল-গবেষক। কবির ওই গানের খাতা তাঁর সংগ্রহশালার জৌলুস বাড়িয়েছে কয়েক গুণ। এ দিন সংগ্রহশালাটির উদ্বোধন করেন নজরুল-গবেষক মীরাতুন নাহার।

কী ভাবে হাতে এল ওই গানের খাতা?

Advertisement

বছর কয়েক আগে অরিন্দম হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো বিবর্ণ ওই খাতা খুঁজে পান কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ায় পুরনো বইয়ের স্তূপে। পুরনো বইয়ের খোঁজে অরিন্দম প্রায়ই কলেজ স্ট্রিটে যান। তিনি জানান, ২০১৫ সালে এক দিন একটি দোকানের সামনে একটি ট্রাক এসে থামে। তাতে থরে থরে পুরনো বই। ট্রাক থেকে বই নামিয়ে যখন গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেগু‌লি নেড়েচেড়ে দেখতে থাকেন তিনি। হঠাৎই একটি খাতা তাঁর চোখ টানে। লম্বা খাতার উপরে লেখা, ‘অপ্রচলিত রাগ’। বাঁ-দিকে লেখা ‘স্বরলিপি’। ‘জগৎ ঘটক’ নামটা বেশ পড়া যাচ্ছিল। আরও লেখা, ‘কর্নওয়ালিশ স্ট্রীট, কলিকাতা, জুন ১৯৩১’। পাতার একেবারে নীচে লেখা ‘কাজী নজরুল ইসলাম’।

দেখেই বিদ্যুৎ খেলে যায় অরিন্দমের শরীরে। দোকানি ৩০০ টাকা দাম চান। কথা না বাড়িয়ে ওই টাকাতেই ‘অমূ‌ল্য’ খাতাখানি কিনে বাড়ি ফেরেন অরিন্দম। তিনি বলেন, ‘‘জগৎ ঘটকের স্বরলিপি লেখার উপরে নজরুলের সবচেয়ে বেশি আস্থা ছিল। খাতাটি পেয়ে আমি উত্তর কলকাতায় জগৎ ঘটকের মেয়ে মধুমিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। খাতাটি দেখে তিনি কেঁদে ফেলেন। জানান, আকাশবাণী থেকে গান গেয়ে ফেরার পথে কলকাতায় ট্যাক্সিতে খাতাটি হারিয়ে গিয়েছিল। খাতার খোঁজে কবি এবং তাঁর (মধুমিতার) বাবা কলকাতা ঢুঁড়ে ফেলেছিলেন। হারানো খাতা খুঁজে পেতে কাগজে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন তাঁরা।’’

অরিন্দম জানাচ্ছেন, ওই খাতায় মোট ৩৬টি গান আর স্বরলিপি রয়েছে। সে সব গান আজ ইতিহাস! স্বরলিপি-সহ ওই সব গানের মধ্যে রয়েছে, ‘এসো চিরজনমের সাথী’, ‘না মিটিতে আশা’, ‘শ্মশানে জাগিছে শ্যামা’, ‘আয় মা চঞ্চলা মুক্তকেশী’ প্রভৃতি।

অরিন্দমের নজরুল ভান্ডারে বই ও পত্রপত্রিকার সংখ্যা সাড়ে তিনশোরও বেশি। অরিন্দম জানান, নজরুলপ্রেমীদের জন্য সংগ্রহশালাটি খুলে দেওয়া হয়েছে। সেটি তিনি উৎসর্গ করেছেন নজরুল বিশেষজ্ঞ ব্রহ্মমোহন ঠাকুর এবং নৃপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রী অশোকা ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে। তাঁরা তাঁকে এই কাজে অনেকসাহায্য করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement