বাঁশবেড়িয়ায় কার্তিকপুজোর বিজয়ার শোভাযাত্রার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
করোনা-পর্বে গত দু’বছর চুঁচুড়ায় কার্তিক পুজোয় জৌলুস ছিল না বললেই চলে। এ বছর বিধিনিষেধ না-থাকায় একদিনের পুজো হলেও জাঁক ফিরেছিল। শুক্রবার বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও মাতল শহর। চন্দননগরের আলোর খেলা ভরিয়ে দিল দর্শনার্থীদের মন।
মোট ২৯টি পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছিল। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয়ে যায় শোভাযাত্রা। চলে শনিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত। তোলাফটক মোড় থেকে কামারপাড়া, খড়ুয়াবাজার হয়ে লোহাপট্টি, বাস স্ট্যান্ড, ঘড়ির মোড় হয়ে প্রতিমা নিয়ে পুজো কমিটিগুলি যে যায় মণ্ডপে ফিরে যায়। কোনও পুজো কমিটির ট্রাকের আলোয় দেখা গিয়েছে ঘোড়ায় টানা রথ, কোনওটিতে কীর্তনিয়ার খোল বাজানো, ম্যাজিক, ১০৮ প্রদীপ বা ডেঙ্গি থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতার বার্তা।
শুধু আলোই নয়, কোনও পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় শামিল করেছিল আদিবাসী মহিলাদের নাচ, কোথাও মহিলা ঢাকি, বা ওড়িশার নৃত্যগোষ্ঠীর নাচ। ছিল মাদলের বোলও। চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, ব্যান্ডেল, মগরা থেকেও থেকে লোক এসেছেন এই শোভাযাত্রা দেখতে। শহর জুড়ে নানা পসরা নিয়ে বসে পড়েছিলেন বিক্রেতারা। বিসর্জনকে কেন্দ্র করে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
পাশের শহর বাঁশবেড়িয়ায় আজ, রবিবার কার্তিক বিসর্জন। এখানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। সাহাগঞ্জ- বাঁশবেড়িয়া কেন্দ্রীয় কার্তিক পুজো কমিটির অধীনে থাকা ৪২টি পুজো শোভাযাত্রায় শামিল হচ্ছে। ব্যান্ডেলের কেওটা থেকে ধোপাঘাট হয়ে পঞ্চাননতলা ঘুরে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার সামনে দিয়ে শোভাযাত্রা আবার কেওটায় ফিরে যাবে। লাইব্রেরি ঘাট এবং ধোপাঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, শোভাযাত্রার পথে চারটি ড্রোনে নজরদারি চলবে। এ ছাড়াও মোড়ে মোড়ে সিসিক্যামেরা রয়েছে। নিরঞ্জন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শনিবার দুপুরে পুলিশ, দমকল এবং বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শন করেন। ছিলেন বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধানও।
হুগলি (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘গঙ্গার ঘাটে নজরদারির জন্য সরকারি স্টিমার ঘুরবে। পাঁচটি ‘নো-এন্ট্রি’ পয়েন্ট করা হয়েছে। বিকেল চারটের পর থেকে রাস্তাগুলিতে ‘নো-এন্ট্রি’ থাকবে। রাস্তায় সাদা পোশাকে মহিলা ও পুরুষ পুলিশকর্মীরা টহল দেবেন।’’
সাহাগঞ্জ-বাঁশবেড়িয়া কেন্দ্রীয় কার্তিক পুজো কমিটির সভাপতি তথা বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী জানান, রাস্তায় ৪০টিরও বেশি পানীয় জলের গাড়ি থাকবে। বিভিন্ন মোড়ে থাকছে বায়ো-টয়লেট। ধোপাঘাট-সহ কিছু জায়গায় থাকছে ছ'টি অ্যাম্বুল্যান্স এবং পাঁচটি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প। শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ।