সেজে উঠেছে দ্বারিয়াপুর গ্রামের ইকো ট্যুরিজ়ম পার্ক। নিজস্ব চিত্র
বহু বছর ধরে খাসজমিটি পড়েছিল। জমছিল আবর্জনা। জমির কিছুটা বেদখলও হয়ে গিয়েছিল। গোঘাট-২ ব্লকের কামারপুকুর পঞ্চায়েতের দ্বারিয়াপুর গ্রামের প্রায় ১০০ বিঘা খাসজমিটি উদ্ধার করে ইকো ট্যুরিজ়ম পার্ক গড়া হল ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতের উদ্যোগে। আগামী ৭ জানুয়ারি পার্কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের।
বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “এলাকাটির পরিবেশ ফেরানোর পাশাপাশি পার্কের ৬টি পুকুরকে কেন্দ্র করে মাছ চাষ, হাঁস চাষ, পাড়গুলিতে আনজ ও ফলের বাগান-সহ নানা ব্যবস্থাপনায় বেকারদের কর্মসংস্থানও হবে। পর্যটকদের সেখানে থাকার ব্যবস্থাও থাকছে। সর্বোপরি ওই পার্ক থেকে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল মজবুত করাও নিশ্চিত হল।”
জায়গাটি কামারপুকুরের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। শ্রীরামকৃষ্ণের একটি পৈতৃক ভিটে রয়েছে ওই গ্রামে। সেখানে শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দিরও আছে। কামারপুকুর মঠে আসা ভক্তেরা সেখানেও ঘুরে আসেন। পার্কটির নাম দেওয়া হয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণের মা চন্দ্রমণিদেবীর নামে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্ক তৈরির পরিকল্পনা রচনা করে কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। জায়গাটিকে তিনটি ক্ষেত্রে ভাগ করে শুরুতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প এবং পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল মিলিয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকায় পুকুরগুলি সংস্কার এবং ভূমি উন্নয়ন করা হয়। দফায় দফায় জেলা পরিষদ, জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর, সাংসদ তহবিল-সহ নানা তহবিলের টাকায় সেখানে গড়ে উঠেছে শিশু উদ্যান, একটি পুকুরকে কেন্দ্র করে জলের ফোয়রা, অন্য একটি পুকুরে নৌকা-বিহারের ব্যবস্থা। সব ক’টি পুকুরে মাছ চাষ এবং ক্যাম্বেল হাঁসের চাষ হবে। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে এলাকা আলোকিত করা হয়েছে। হয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্যান্টিন এবং পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য ৬টি কটেজ। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও থাকছে।
পঞ্চায়েত প্রধান তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রায় ১ কোটি টাকার প্রকল্প এটি। আপাতত একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং চার জনকে পার্ক তদারকির জন্য অস্থায়ী ভাবে রাখা হয়েছে। উদ্বোধনের পর বিশেষ সভা ডেকে দফায় দফায় পুকুরগুলিকে ঘিরে অন্তত শ’দেড়েক দুঃস্থ পরিবারের আয়ের সংস্থান করার পরিকল্পনা আছে। পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি খাকি ক্যাম্বেল হাঁস চাষ-সহ পাড়গুলিতে পশুপালনেরও পরিকল্পনা হয়েছে।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রকল্পটির যথাযথ রূপায়ণে কৃষি দফতর, মৎস্য দফতর, প্রাণীসম্পদ দফতর, বন দফতর, উদ্যানপালন দফতরের সমন্বয়ে কাজ হবে।