নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলো আনাজ বাজার।
ঘিঞ্জি বাজারটিতে যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ সব নিয়ে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। লকডাউন পর্বে বাজারটি প্রশাসনেরও মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ায়। গোঘাটের কামারপকুর ডাকবাংলো সংলগ্ন প্রাচীন ওই বাজারটি সংস্কারে অবশেষে হাত দিল কামারপুকুর পঞ্চায়েত।
পঞ্চায়েত প্রধান রাজদীপ দে বলেন, ‘‘রাজ্য পঞ্চম অর্থ কমিশন তহবিল থেকে ভগ্নদশা বাজারটির আমূল সংস্কারের পরিকল্পনা করেছি আমরা। প্রথম দফায় চারটি স্থায়ী ছাউনি করা হচ্ছে। দফায় দফায় আরও খান দশেক ছাউনি, নিকাশি ব্যবস্থা করা হবে। পর্যাপ্ত আলো লাগানো হবে। শৌচাগার করা হবে।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারটি বসে প্রায় আড়াই বিঘা এলাকা জুড়ে। সংস্কারের কাজে প্রথম দফায় রাজ্য অর্থ কমিশন থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রাপ্ত তহবিল অনুযায়ী, দফায় দফায় বাজারটিতে বিভিন্ন আনাজ, মাছ ইত্যাদি মিলিয়ে দু’শোর কিছু বেশি ছোট-বড় ব্যবসায়ীর জন্য ৮-১০টি ছাউনি করার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সুশীলকুমার ভক্ত। ইঞ্জিনিয়ারদের হিসাবে, এক একটি শেড এবংতার সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ, নিকাশি নালা, শৌচাগার, ভিতরের ঢালাই রাস্তা ইত্যাদি খরচ মিলিয়ে ৪ লক্ষ টাকা করে খরচ।
অতীতে বাজারটি ছিল কামারপুকুরের পুরনো হাটতলায়। ক্রমে ক্রেতা-বিক্রেতার বহর বাড়ায় বছর পঁচিশ আগে ডাকবাংলো সংলগ্ন মূল রাস্তার পাশে বাজার সরিয়ে আনা হয়। বাজারটিতে গোঘাটের দু’টি ব্লক ছাড়াও সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামের ক্রেতারা যেমন ভিড় করেন, তেমনই ওই সব জায়গার ব্যবসায়ী এবং আনাজ চাষিরাও নিজেদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসেন। পঞ্চায়েতের তরফে ব্যবসায়ীদের থেকে কর আদায় করা হলেও শৌচাগার, পানীয় জল বা নিকাশি ব্যবস্থা এবং ভ্যাট নিয়মিত পরিষ্কার না করা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। মাসের পর মাস পচনশীল আবর্জনার দুর্গন্ধ নিয়ে এলাকার মানুষের বিস্তর অভিযোগ আছে।
বাজারের উন্নয়নের পরিকল্পনায় খুশি ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় মানুষ। দিলীপ রায়, উৎপল বারিক, বাদল মণ্ডল, দুঃখীরাম ভুঁইঞা প্রমুখ ব্যবসায়ী জানান, বাজারের উন্নয়নের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। জায়গার মাপ অনুযায়ী পঞ্চায়েত প্রতি দিন ব্যবসায়ী-পিছু গড়ে ২০ টাকা এবং রাস্তায় যাঁরা বসেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ৫-১০ টাকা নেয়। এরপরেও বাজার সংস্কার নিয়ে পঞ্চায়েত উদাসীন থাকায় কয়েক বার ক্ষোভ-বিক্ষোভও দেখানো হয়। এলাকাবাসীর আশা, এ বার দূষণ নিয়ন্ত্রণ হবে।