পাণ্ডুয়ার কালী পুজোর থিমে রয়েছে হাজারো চমক। — নিজস্ব চিত্র।
বরাবরই নজর কেড়েছে পাণ্ডুয়ার কালীপুজো। গত কয়েক বছর ধরে তাতে পড়েছে থিমের ছোঁয়া। তার পর থেকেই ভিড় আরও বেড়েছে হুগলির এই জনপদে। পাণ্ডুয়া ব্লকে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২৬০টি কালীপুজো হয়। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে থাকে ৪৭টি পুজো। পুজো দেখতে ভিড় জিটি রোডে। সামলাতে হিমশিম পুলিশ, প্রশাসন।
কাকলিতলা ব্যবসায়ী সমিতির পুজো এ বার ৫১ বছরে পা রেখেছে। মণ্ডপসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে 'উমার আগমন'। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে দু’হাতের বদলে কালীর দশ হাত। জনজাতি সমাজের আদলে মণ্ডপসজ্জা করেছে প্রগতি সংঘ। পাটকাঠি, বিভিন্ন গাছের ছাল, নারকেলের মালা দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। ৬৮ বছরে পা রেখেছে তাদের এই পুজো। প্রতিমাতেও রয়েছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। দেবীর দু’পাশে স্থান পেয়েছে পৌরাণিক চরিত্রেরা।
গোহাট মেলাতলা ব্যবসায়ী সমিতির এ বছরের থিমে রয়েছে অভিনবত্ব। উদ্যোক্তাদের মতে, অতিমারির সময় জীবন থেকে রামধনুর যে সাতটি রং হারিয়ে গিয়েছিল, তাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে। ৩০ জন শ্রমিক মিলে এক মাস ধরে বাঁশের টুকরো দিয়ে মণ্ডপ নির্মাণ করেছেন। এখানেও মা কালী দশ হাতে সকলকে আশীর্বাদ করছেন। থিম ভাবনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। বাজেট প্রায় আট লক্ষ টাকা।
পাণ্ডুয়া মধ্যমপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির পুজো এ বার ৫৭ বছরে পা রেখেছে। থিম, 'শ্যামা মায়ের চরণতলে'। থার্মোকল, কুলো, বেত দিয়ে মণ্ডপ নির্মাণ করা হয়েছে। নরমুণ্ডের উপর দেবীর অধিষ্ঠান। পান্ডুয়ার নিরদগড় সবুজ সংঘ এ বছর কেরলের নাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ নির্মাণ করেছে। ২৫ ফুট উচ্চতায় রয়েছে প্রতিমা।
কালী পুজোর জন্য ভিড় জিটি রোডে। সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে তৎপর পুলিশ। হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম দেবীদল কুণ্ডু জানান, পুজো উপলক্ষে জিটি রোডের উপর চারটি পুলিশ ক্যাম্প করা রয়েছে। দর্শনার্থীদের কথা মাথায় রেখে জিটি রোডের উপরে বন্ধ করা হয়েছে টোটো, অটো চলাচল। মোতায়েন থাকছেন ২৭৫ জন পুলিশ কর্মী, ৩০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার। সঙ্গে থাকছেন এক জন ইনস্পেক্টর এবং ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার। নিরঞ্জনের দিন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ড্রোনে নজরদারি চালানো হবে। পুজোর চার দিন ডিজের ব্যবস্থা রাখা যাবে না।
পান্ডুয়া বিডিও শ্রাবন্তী বিশ্বাস জানান, কালীপুজোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রশাসনিক বৈঠক করা হয়েছে। ১২ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত হবে পুজো। ১৫ তারিখ শোভাযাত্রা করে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে। ঘাটগুলিতেও বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোনও শিশু ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলে যাতে সঠিক ভাবে বাড়ি পৌঁছতে পারে, সে কারণে তাদের গলায় চিলড্রেন’স কার্ড ঝোলানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।