প্রতীকী চিত্র
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নড়ে বসল হাওড়া জেলা প্রশাসন। শুক্রবার থেকে ফের হাওড়া জেলা হাসপাতালে শুরু হল করোনা পরীক্ষা। গত এক মাসে করোনার সংক্রমণ ১১.৩৬ গুণ বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যদিও এ দিনও হাওড়া শহরের উত্তর এবং দক্ষিণ প্রান্তের দু’টি নির্বাচনী সভায় করোনা সতর্কতা নিয়ে কারও বিন্দুমাত্র হেলদোল চোখে পড়েনি। সেখানে দূরত্ব-বিধি তো মানা হয়ইনি, এমনকি কারও মুখে মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায়নি। অথচ, হিসেবে চোখ রাখলেই স্পষ্ট হবে চিন্তার কারণ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ১ মার্চ হাওড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪। এক মাস পরে বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল সেই সংখ্যা হয়েছে ১৫৯। হিসেব মতো যা এক মাসে বেড়েছে ১১.৩৬ গুণ! জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, এখনও সতর্ক না হলে এ বার ভয়াবহ আকারে সংক্রমণ ছড়াবে।
পরিস্থিতি দেখে তাই ফের করোনা পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। হাওড়া জেলা হাসপাতাল জানাচ্ছে, জ্বর বা সর্দিকাশি নিয়ে সেখানে কেউ এলে গত বছরের মতোই প্রথমে সেই রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হবে। হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগেই ওই ওয়ার্ড রয়েছে। তাই যে কোনও বিভাগেই রোগীরা জ্বর, সর্দিকাশি নিয়ে এলে প্রথমে তাঁদের সেখানকার আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে। তার পরে লালারস সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করতে পাঠানো হচ্ছে কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডেই রোগীকে রাখা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া জেলা হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা রোগীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁকে কোভিড হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর রিপোর্ট নেগেটিভ হলে রোগীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও এ দিন উত্তর হাওড়ায় দেখা গেল, ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম চৌধুরীর সমর্থনে প্রচারে আসা দলীয় সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর সভায় মাস্কহীন প্রচুর মুখ। গাদাগাদি ভিড় করেই সভায় জড়ো হয়েছেন উৎসাহী মানুষ। একই অবস্থা দেখা গেল ডুমুরজলায়, বিজেপির প্রার্থীদের সমর্থনে আসা মিঠুন চক্রবর্তীর সভাতেও। সেখানেও কাউকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।
গত বছর লকডাউনে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হন। সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েক মাস বন্ধ ছিল ওই হাসপাতাল। পরে হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করে ফের চালু করা হয়েছিল।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানালেন, এখন প্রতিদিন শুধু হাওড়া হাসপাতাল থেকেই ৩০-৪০ জনের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। কিছু দিন আগেও এই সংখ্যাটা অনেক কম ছিল। সেই সময়ে সংক্রমণ কমে আসায় লালারস পরীক্ষাও কমে গিয়েছিল। করোনা পরীক্ষা করার পরে রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে রোগীদের সত্যবালা আইডি হাসপাতাল কিংবা বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।