গৌরাঙ্গ মালিক ওরফে রাধে। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে কর্মস্থলে বিশ্বাস অর্জন করে নেওয়া। তার পর ঝোপ বুঝে কোপ। ডাকাতি করতে এমনটাই কৌশল নিয়েছিল গৌরাঙ্গ মালিক ওরফে রাধে। এই কায়দায় পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, ওড়িশা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক ব্যক্তির সিন্দুক সাফ করে দিয়েছিল সেই। একই কায়দায় গত জুন মাসে হাওড়ার এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়েছিল। তার সঙ্গীসাথীরা ধরা পড়েছিল আগেই। এ বার ওই কাণ্ডে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হল ওড়িশার সেই রাধে-ডাকাতকে। বিভিন্ন রাজ্যেই যার মাথার উপর মাথার উপর ঝুলছে ডাকাতির মামলা।
গত ২৫ জুন সন্ধ্যায় ব্যাঁটরা থানার হৃদয় কৃষ্ণ ব্যানার্জির ফার্স্ট বাইলেনের বাসিন্দা গৌতম পালের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ডাকাতরা। গৌতমের ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ওষুধের দোকান রয়েছে। ডাকাতির সময় বাড়িতে ছিলেন গৌতমের স্ত্রী রিমি। ডাকাতরা তাঁকে গামছা দিয়ে বেঁধে, আলমারির দরজা ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং নগদ টাকা লুট করে। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, ওই ব্যবসায়ীর চেনা পরিচিতরা ডাকাতিতে জড়িয়ে। এর পর গৌতমের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সিটি স্ক্যান অপারেটর সৌমজিৎ এবং অ্যাম্বুল্যান্সচালক ধর্মেন্দ্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
ধর্মেন্দ্রর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। জানা যায়, এই ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড ওড়িশার রাধে। সে-ও কাজ করত গৌতমের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ধর্মেন্দ্র স্বীকার করে নেয়, রাধে তার আত্মীয়। ধর্মেন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছে, এর আগে দিল্লিতে ৭৫ লক্ষ টাকা ডাকাতি করে হাওড়ায় তার বাড়িতে গা ঢাকা দেয় রাধে। সে বার দিল্লি পুলিশের এসটিএফ তাকে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। এ বার অবশ্য হাওড়ায় ডাকাতি করার পর দিল্লিতে গা ঢাকা দিয়েছিল রাধে। পুলিশ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার তাকে এ রাজ্যে আনাও হয়েছে।
তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, কোথাও চাকরি করার সময় সংস্থার কর্তার বিশ্বাস অর্জন করতে ‘অতি ভক্তি’ দেখানো রাধে এবং ধর্মেন্দ্র। কিন্তু তা যে ভিন্ন লক্ষণ তা টের পেতেন না কেউই। ফলে একের পর এক ডাকাতি করতে সক্ষম হয় রাধে।