বেআইনি: ডুমুরজলার একটি পুকুর বাঁশ দিয়ে ঘিরে বোজানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
পুকুর ভরাট রুখতে এ বার শহরের কয়েকটি পুকুরকে চিহ্নিত করে শাল-বল্লা দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা করল হাওড়া পুরসভা। সেই সঙ্গে ওই সমস্ত পুকুরের চারপাশে রাস্তা তৈরি করে সৌন্দর্যায়নেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত ৫০টি ওয়ার্ডের ১৪টি পুকুরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুকুর ভরাট-চক্রের হাত থেকে এখনও পর্যন্ত যে পুকুরগুলি রক্ষা পেয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করার শুরু হয়েছে। পুকুরের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে।
হাওড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনি ভাবে পুকুর বুজিয়ে প্রোমোটিং করার অভিযোগ উঠছে। কদমতলায় তৃণমূল জেলা অফিসের পিছনে একটি পুকুর বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। ডুমুরজলায় এইচআইটি কোয়ার্টার্সের পিছনে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুকুর বোজানোর কাজ বন্ধ করতে পুর আধিকারিকেরা নির্দেশ দিলেও বর্তমানে সেটি বাঁশ-টিন দিয়ে ঘিরে বোজানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে। তাই পুকুর বোজানো ঠেকাতে রাজ্য সরকার নির্দেশ দেওয়ায় তৎপর হয়েছে হাওড়া পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, ভরাট হয়ে যাওয়া ঠেকাতে হাওড়া শহরের বিভিন্ন পুকুরের পাড় ঘিরে দিয়ে ও বাঁধিয়ে সেখানে সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হবে। পুকুরের ধারে তৈরি করা হবে রাস্তা। বানানো হবে বসার জায়গা। হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জঞ্জাল বা মাটি ফেলে যাতে পুকুর বোজানো না যায়, তার জন্য পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডে আপাতত ১৪টি পুকুরকে চিহ্নিত করে সেখানে সৌন্দর্যায়ন হবে। পরে আরও কিছু পুকুরকে এই ভাবে বাঁচানো হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরে বেশ কিছু পুকুর জঞ্জাল ও মাটি ফেলে বুজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে পুর দফতরে। ‘চেয়ারম্যান অন কল’ অনুষ্ঠানেও বার বার বাসিন্দারা এই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের সেই সমস্ত অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমে পুর কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, এর পিছনে অসাধু প্রোমোটারদের একটি চক্র সক্রিয়।
পুর চেয়ারপার্সন ও পুর কমিশনারের নেতৃত্বে আধিকারিকেরা মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পুকুর বোজানোর অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের মদতে ফের সেই সব পুকুর বুজিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন পুরকর্তারা। তাঁরা জানান, পুকুর বা জলাজমি ভরাট রুখতে রাজ্য সরকার কড়া অবস্থান নিয়েছে। হাওড়া পুরসভা পুকুরের পাড় বাঁধিয়ে সৌন্দর্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে কোনও ভাবেই তা বোজানো না যায়।