প্রতীকী ছবি
নিকাশি সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই ভুগতে হয়েছে হাওড়াবাসীকে। হাওড়ার নিকাশি সমস্যার উৎস খুঁজতে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এমনটাই মনে করছে হাওড়া পুরসভা, সেচ দফতর ও কেএমডিএ। মঙ্গলবার ওই দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যেরা ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিদর্শনে গিয়ে নিশ্চিত হন, এ বারের বর্ষায় জমা জলের অন্যতম কারণ হল একাধিক দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। তাই দ্রুত তিনটি দফতরের পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বকেয়া কাজগুলি সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বার সামান্য বৃষ্টিতেই বানভাসি অবস্থা হচ্ছে হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডের। ১৪টি ওয়ার্ডের নিকাশি পরিস্থিতি প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা একাধিক বার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দেখে সোমবারই সেচ দফতর ও কেএমডিএ-কে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন পুর কর্তারা। পুরসভার বক্তব্য, হাওড়ার নিকাশির সঙ্গে কেএমডিএ ও সেচ দফতর সরাসরি যুক্ত। কারণ, শহরের জমা জল গিয়ে পড়ে নিকাশি খালে, যার সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে সেচ দফতর। আবার এলাকার জমা জল বার করতে যে ১০টি পাম্পিং স্টেশন আছে, তার সবগুলিই কেএমডিএ-র অধীনে। তাই এ দিন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তিনটি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ হাওড়ার জমা জল কেন সহজে সরছে না, তা দেখতে কোনা সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিদর্শনে যান। সেই সঙ্গে হাওড়ার গুরুত্বপূর্ণ নিকাশি নালা ব্রাঞ্চ ২ ও ৩-এর পরিস্থিতি ও গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত লকগেটগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখেন।
এর পরে সুজয়বাবু জানান, সমস্ত নিকাশি খালে পলি জমে নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণেই এ বছর নিকাশির সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। সেই সঙ্গে লকগেটগুলির সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। তিনি বলেন, ‘‘যে হেতু এত দিন খাল থেকে পলি তোলা হয়নি, তাই নর্দমার পলি তুলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। নিকাশি খালের নাব্যতা কমে যাওয়ায় জল ধাক্কা খেয়ে পিছনে ফিরে আসছে। তাই দ্রুত বিভিন্ন সেচ খালের পলি তোলার কাজ শুরু
হবে। কেএমডিএ-র ১০টি পাম্পিং স্টেশনের পাম্পগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে।’’
সুজয়বাবু জানান, আজ, বুধবার পাম্পিং স্টেশনগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে জল জমে থাকা ১৪টি ওয়ার্ডে নর্দমা মেরামতি ও সেখান থেকে পলি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ১ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩৭টি রাস্তা মেরামতির কাজও শুরু হবে। আবহাওয়া ভাল থাকলে চলতি মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।