ফাইল চিত্র।
খাতায়কলমে তাঁরা পুরসভার কর্মী। অথচ সারা দিনে প্রায় কোনও কাজই নেই। কাজে গতি আনতে এ বার বিভিন্ন দফতর থেকে এমন ‘অলস’ কর্মীদের খুঁজে বার করে অন্য দফতরে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। সে জন্য ইতিমধ্যেই যে সব পুর বিভাগে অতিরিক্ত কর্মী রয়েছেন বা যে সব কর্মীদের দিনভর কোনও কাজ করতে হয় না, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এর পরেই কর্মী-সংখ্যা কম রয়েছে, এমন পুর দফতরে বদলি করা হবে তাঁদের।
পুরকর্তাদের মতে, অনেক সময়েই দফতরে কর্মী-সংখ্যা কম থাকার অজুহাতে রাজস্ব আদায়ে ঢিলেমি দেওয়া হচ্ছে। একই কারণ দেখিয়ে কোনও কাজের জন্য পুরসভায় আসা সাধারণ মানুষকেও দিনের পর দিন ঘোরানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অথচ বাস্তবে কিছু কিছু দফতরে কর্মীদের সংখ্যা এতটাই বেশি আছে যে, দিনভর তাঁরা কোনও কাজ না করে দফতরের বাইরে ঘুরে বেড়াতে পারেন। কাজের দায়িত্ব হাতে থাকা সত্ত্বেও অনেকে আবার কাজ না করে অন্যত্র চাকরি করেন বলেও অভিযোগ। তাই ‘আসি যাই, মাইনে পাই’— এই ধারণা দূর করে কাজে গতি আনতেই এ বার কোমর বাঁধছে হাওড়া পুরসভা।
পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রাজস্ব আদায় এবং ব্যয়ের চাপ কমাতে নতুন করে কর্মী নিয়োগ না করে বিভিন্ন দফতরের একাধিক ‘অলস’ কর্মীদের নিয়েই গড়া হবে একটি সমীক্ষক দল। সেই মর্মে একটি নির্দেশও জারি করে প্রতিটি দফতরে পাঠিয়েছে পুর নিগম। তাতে প্রতিটি দফতরের অতিরিক্ত কত জন কর্মী রয়েছেন, তা চিহ্নিত করার নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।
পুরকর্তাদের বক্তব্য, হোর্ডিং, পার্কিং, কর আদায় প্রভৃতি থেকে আয় বাড়াতে এবং স্বাস্থ্য দফতর-সহ অন্যান্য কয়েকটি দফতরের কাজের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করা হবে। যাতে আগামী দিনে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি পুর পরিষেবা ঠিকঠাক ভাবে দেওয়া সম্ভব হয়।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নতুন করে কর্মী নিয়োগ না করে পুর নিগমের ব্যয়ভার যাতে না বাড়ে, তাই বর্তমান বেতনভুক কর্মীদেরই ছাঁটাই না করে এই কাজে লাগানো হবে। কারণ দেখা যাচ্ছে, পুরসভায় এমন অনেক কর্মী আছেন যাঁদের কোনও কাজ নেই।’’
যেমন তিনি জানাচ্ছেন, একটি পার্ক দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরসভার তিন কর্মীকে। দিনে তাঁদের কাজ বলতে সকাল ৮টায় ও রাত ৮টায় পার্কের দরজা খোলা-বন্ধ করা। দিনভর এইটুকু কাজ করেই বাড়ি চলে যান ওই তিন কর্মী। কিন্তু পুরসভার অস্থায়ী কর্মী হিসাবে বেতন পান তাঁরা। অথচ দিনের অন্য সময়ে অন্য কাজ করেন বলে অভিযোগ। এ বার তাই সেই সব অতিরিক্ত কর্মীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।