সময়ে টাকা খরচ না করলে তা ফিরে যাবে। — প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা ভোটের ঠিক পরেই কেন্দ্রীয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের শেষ কিস্তির টাকা চলে এসেছিল হাওড়ায়। তা খরচ করে ফেলার কথা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে। কারণ, আগামী অর্থবর্ষ থেকে শুরু হবে ষোড়শ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন। অথচ, দু’তিনটি ব্লক বাদ দিলে হাওড়া জেলার ১৪টি ব্লকের বেশিরভাগই পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা খরচের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সব টাকা কী ভাবে খরচ করা যাবে তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের কাছে। কারণ, সময়ে টাকা খরচ না করলে তা ফিরে যাবে এবং পরবর্তী অর্থ কমিশনের তহবিল পেতে সমস্যা হবে।
সম্প্রতি টাকা খরচের গতি আরও দ্রুত করতে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি। তিনি অবশ্য দাবি করেন, কোনও সমস্যা হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘বকেয়া টাকার কাজের দরপত্র হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ প্রতিটি ব্লকেই হয়ে যাবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষের গোড়ায় জেলার ১৪টি ব্লকের জন্য মোট বরাদ্দ করা হয় ২৮ কোটি ৭১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। এই টাকা পঞ্চায়েত সমিতিগুলির মাধ্যমে নিকাশি, রাস্তা, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি কাজে খরচ করার কথা। কিন্তু চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, খরচ হয়েছে ১৫ কোটি ৩৬ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। খরচ না হওয়া টাকার পরিমাণ ১৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ৪৬ হাজার। খরচের হার বরাদ্দের ৫৩.১৩%।
কেন তহবিল খরচে দেরি? বেশির ভাগ ব্লক প্রশাসনের দাবি, এ বার লোকসভা নির্বাচন পর্ব দীর্ঘ সময় ধরে চলেছিল। ফলে, প্রথম কিস্তির টাকা খরচেই দেরি হয়। তা ছাড়া, বর্ষার সময়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যায়নি।
খরচের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে বাগনান ১ ব্লক। তারা পেয়েছে ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা। খরচ করতে পেরেছে ৬৯ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। শতাংশের হিসাবে যা ৩৯.৭২। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, একটা মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ হয়েছিল বাগনানের নিকাশির কাজে। কিন্তু বর্ষার জন্য কাজ করা যায়নি। দরপত্র হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু হয়ে যাবে।
বিডিও মানসকুমার গিরি বলেন, ‘‘বেশিরভাগ টাকা নিকাশি খালের সংস্কারে বরাদ্দ হলেও বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারের জন্য ওই কাজ করা যায়নি। ট্রান্সফর্মার সরাতে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে কথা চলছে।’’
টাকা খরচের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে উলুবেড়িয়া ১ ব্লক। তারা পেয়েছে ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা। খরচ করেছে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। শতাংশের হিসাবে যা ৭৬.১৩। বাকি টাকার দরপত্র হয়ে গিয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর।