হত্যাকাণ্ডে ধৃতরা। — নিজস্ব চিত্র।
তিন দিনের মাথায় হাওড়ার ডোমজুড়ে রেলকর্মীর মাথা কেটে খুনের ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। ডোমজুড় এবং জগাছা থানা যৌথ ভাবে ওই ঘটনার তদন্ত করছিল। ওই কাণ্ডে নিহতের শ্যালিকার ছেলে এবং এক গ্যারাজ মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, সন্দেহের তালিকায় রয়েছে নিহতের স্ত্রীও। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে তাঁকে। বিজয়া দশমীর দিন, বুধবার হাওড়ার ডোমজুড়ে উদ্ধার হয়েছিল রেলকর্মী সুরেশ সাউয়ের মুণ্ডহীন দেহ। শনিবার সলপ থেকে উদ্ধার হয়েছে সুরেশের মাথা।
সুরেশকে হত্যার অভিযোগে তাঁর শ্যালিকার ছেলে জি শেখর এবং স্বপন সাঁতরা ওরফে মিঠুন নামে ডোমজুড়ের খেজুরতলা এলাকার এক গ্যারাজমালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, নবমীর রাতে মিঠুনের গ্যারাজেই গিয়েছিলেন সুরেশ। তার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পর দিন ডোমজুড়ের সলপে সুরেশের মুণ্ডহীন খণ্ডবিখণ্ড দেহ উদ্ধার হয় বস্তাবন্দি অবস্থায়। মৃতদেহের পকেটে পাওয়া আধার কার্ড দেখে পরিচয় জানা যায়। এর পর পুলিশ শেখর এবং মিঠুনকে গ্রেফতার করে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবার সলপ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নিবড়া এলাকা থেকে সুরেশের কাটা মাথা উদ্ধার হয়। ধৃতেরা বাইকে করে দেহ নিয়ে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ফেলে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, সুরেশের একটি দূরপাল্লার বাস রয়েছে। তার দেখভাল করতেন মিঠুন। সুরেশের একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কও ছিল বলে দাবি। সেই কারণে তাঁর স্ত্রী রাজেশ্বরীর সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সম্প্রতি সুরেশ এবং রাজেশ্বরী আলাদা থাকতেন। সেই সুযোগে রাজেশ্বরীর সঙ্গে মিঠুর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। তাঁরা এ-ও মনে করছেন, সুরেশের বাসের মালিকানা হাতে পেতেই তাঁকে খুনের ছক কষেন মিঠুন। পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখরের বোনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সুরেশের। তার জেরে শেখরের বোন সন্তানসম্ভবাও হয়ে পড়েন। সেই আক্রোশ থেকে সুরেশকে খুনের পরিকল্পনায় সুরেশের শ্যালিকার ছেলে শেখরও যোগ দেন বলে পুলিশের ধারণা।