রেড রোডে নাচতে পারলেন না ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি
রেড রোডের পুজো কার্নিভালে অংশ নিতে পারলেন না নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এ বছরের পুজো কার্নিভাল রইল ডোনা-হীন। তিনি যে কার্নিভালে থাকতে পারবেন না, আগেই তা জানানো হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইনে। নিজে নাচতে না পারলেও অনুষ্ঠান দেখতে হাজির হয়েছেন তিনি। কার্নিভালে ‘পারফর্ম’ করেছেন তাঁর নাচের স্কুল ‘দীক্ষামঞ্জরী’র ছাত্রছাত্রীরা।
পুজোর মধ্যে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ডোনা। নবমীর রাতে তাঁকে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার, একাদশীর দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন সৌরভ-পত্নী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগের চেয়ে তিনি সুস্থ। কিন্তু খোলা আকাশের নীচে পুরোদমে ‘পারফর্ম’ করার ক্ষেত্রে ডোনার শরীর সায় দেবে না বলেই মত তাঁদের।
ডোনা না থাকলেও তাঁর নাচের স্কুল ‘দীক্ষামঞ্জরী’র ছাত্রছাত্রীরা ডোনার শেখানো নাচেই শনিবারের রেড রোড মাতিয়ে রেখেছেন। কার্নিভালে পারফরম্যান্সের জন্য তাঁর শতাধিক ছাত্রছাত্রীর ‘কোরিয়োগ্রাফি’ পরিকল্পনা করেছেন ডোনা। অসুস্থ শরীর নিয়েই শুক্রবার বিকেলে নাচের চূড়ান্ত মহড়াতে এসেছিলেন তিনি। ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ছেলেমেয়েদের মহড়ার খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেছেন।
সূত্রের খবর, কার্নিভালে পাঁচ মিনিটের পারফর্ম করতে বলা হয়েছিল ডোনা এবং তাঁর ছাত্রছাত্রীদের। এতে সম্মতিও দিয়েছিলেন শিল্পী। রেড রোডে শনিবার দু’টি পারফরম্যান্সে ডোনার থাকার কথা ছিল। সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়াও পাড়ার ক্লাব বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের তরফে নৃত্য প্রদর্শনের কথা ছিল ডোনার। কিন্তু উৎসবের আবহে আচমকাই তিনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সে জন্য দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানও বাতিল করতে হয় তাঁকে। তার পর কলকাতার পুজোর কার্নিভালেও সশরীরে ‘পারফর্ম’ করতে পারলেন না ডোনা। তবে নিজে নাচতে না পারলেও রেড রোডের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হয়েছেন।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যের কারণে কার্নিভালে তাঁর ‘পারফর্ম’ না করতে পারার কথা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে জানিয়ে দেন নৃত্যশিল্পী। শুক্রবার মহড়ায় এসে তিনি জানান, তাঁর শরীর কিছুটা দুর্বল রয়েছে।
এক সরকারি আধিকারিকের বক্তব্য, কার্নিভালে সক্রিয় ভাবে অংশ নেওয়ার খুবই ইচ্ছা ছিল ডোনার। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টাও করবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তবে চিকিৎসকরা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, গত দু’বছর অতিমারির কারণে রেড রোডে পুজো কার্নিভাল বন্ধ ছিল। তার পর এ বছর নতুন উদ্যমে কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছে। দুর্গাপুজো এ বছর পেয়েছে বিশ্বজনীন স্বীকৃতি। ইউনেসকোর ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’-র তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে এই উৎসব। কার্নিভালে অংশ নিয়েছে সেরা ৯৪টি পুজো কমিটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বহু বিশিষ্ট জন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। রয়েছেন ইউনেসকোর প্রতিনিধিরাও।