House for All

থমকে শহরের আবাসের বাড়িও! সপরিবার দরমার ঘরে ঠাঁই হয়েছে হুগলির যমুনাবালাদের

আট-ন’মাস আগে শুরু হয়েছিল বাড়ি তৈরির কাজ। কিন্তু প্রথম কিস্তির পর আর প্রকল্পের টাকা হাতে পাননি উপভোক্তারা। যার জেরে ভিত তৈরির পরেই আটকে গিয়েছে নির্মাণকাজ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বৈদ্যবাটী শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৫৮
Share:

ক্লাব থেকে পাওয়া ঘরে থাকছেন যমুনাবালারা। নিজস্ব ছবি।

সরকারি বাড়ি তৈরির কাজ আটকে যাওয়ায় গেরস্থালির সরঞ্জাম নিয়ে সস্ত্রীক গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে উঠেছিলেন মণিকাঞ্চন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘স্বজনপোষণ’-এর অভিযোগ নিয়ে শোরগোলের আবহে ঝাড়গ্রামের শিলদার ওই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। এ বার শহরের আবাস প্রকল্পেও একই ছবি দেখা গেল হুগলির বৈদ্যবাটী পুরসভা এলাকায়।

Advertisement

আট-ন’মাস আগে শুরু হয়েছিল বাড়ি তৈরির কাজ। কিন্তু প্রথম কিস্তির পর আর প্রকল্পের টাকা হাতে পাননি উপভোক্তারা। যার জেরে ভিত তৈরির পরেই আটকে গিয়েছে নির্মাণকাজ! এই পরিস্থিতিতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে পলিথিন টাঙিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে উপভোক্তাদের। উপায় না দেখে কেউ কেউ আবার পাড়ার ক্লাবেও মাথা গুঁজেছেন।

গ্রামেগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পাশাপাশি পুরএলাকাতেও কেন্দ্রের ‘সবার জন্য বাড়ি’ (হাউস ফর অল) প্রকল্প চালু রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য চার কিস্তিতে ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা নিজেদের পকেট থেকে খরচ করতে হয় উপভোক্তাদের। বৈদ্যবাটী পুরসভা সূত্রে খবর, ওই পুরএলাকায় মোট ২৩টি ওয়ার্ডে ২০১৮-’১৯ আর্থিক বর্ষে অনুমোদন পাওয়া ৭২০টি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে বর্তমানে। নিয়ম হল, বাড়ি তৈরির ভিত তৈরি করে প্রথম পর্যায়ের ‘জিও ট্যাগিং’ করলে, তবেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ঢোকে।

Advertisement

উপভোক্তাদের অভিযোগ, আগের কাঁচা বাড়ি ভেঙে এখন পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না ঢোকায় ৮-৯ মাস ধরে সেই কাজ থমকে রয়েছে। যারা জেরে অনেকেই এখন গৃহহীন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর লাহানগর কলোনির বাসিন্দা যমুনাবালা দাস বলেন, ‘‘আমাদের এখন থাকারই জায়গা নেই। ৬ মাস ধরে গৃহহীন। যা টাকা ঢুকেছে, তাতে ভিত পর্যন্ত কাজ হয়েছে। আর টাকা পাইনি। ক্লাব থেকে একটা ঘর দিয়েছে। ছেলে, বৌমা, নাতিকে নিয়ে দরমার ঘরে থাকি। শীতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’’ ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা নৃপেন দাসের কথায়, ‘‘৫০ হাজার টাকা পেয়ে ঘর শুরু করেছি। তার পর থেকে আর কোনও টাকা ঢোকেনি।’’

২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হরিপদ পাল জানান, এই বিষয়টি তিনি পুরপ্রধানকে জানিয়েছেন। পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে ১৪-১৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু কেন্দ্র যে ভাবে টাকা পাঠাচ্ছে, তা দিয়ে এত বাড়ি একসঙ্গে তৈরি করা সম্ভব নয়। টাকা কম আসায় কাজ দ্রুত করা যাচ্ছে না।!’’ এ প্রসঙ্গে হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘সুডা (রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থা) থেকে সরাসরি পুরসভাগুলোতে এই প্রকল্পের টাকা আসে। প্রকল্পের কাজ যখন শুরু হয়েছে, টাকা চলে আসবে। দেরি কেন হচ্ছে, দফতরের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement