—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্য অর্থ কমিশনের শর্তাধীন (টায়েড) খাতে গত অর্থবর্ষের বরাদ্দের টাকা একেবারেই খরচ করতে পারেনি হুগলি জেলার ১১টি পঞ্চায়েত। যার জেরে জেলার মোট ২০৭টি পঞ্চায়েতের পরবর্তী বরাদ্দ আসছে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েত মিলিয়ে প্রথম কিস্তির (মোট বরাদ্দের ৫০শতাংশ) ১৪ কোটি ৪৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯২৫ টাকা আসে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। নির্দেশ ছিল, নতুন অর্থবর্ষ শুরুর আগে, ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রথম দফার তহবিলের অন্তত ৬০ শতাংশ সদ্ব্যবহার করতে হবে। বাকি টাকা এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে খরচ করতে হবে। যাতে নতুন অর্থবর্ষের গোড়ার দিকেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মেলে। কিন্তু গত মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ১৯৬টি পঞ্চায়েত গড়ে ৬০ শতাংশ টাকা খরচ করলেও ১১টি পঞ্চায়েতের ওই তহবিলের ব্যয় ‘শূন্য’। অবিলম্বে অব্যবহৃত তহবিল খরচের জন্য সংশ্লিষ্ট বিডিওদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে।
যে সব পঞ্চায়েতে ওই তহবিল অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, তার মধ্যে আরামবাগ মহকুমারই ৯টি। এ ছাড়া রয়েছে জাঙ্গিপাড়ার মুণ্ডলিকা এবং চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের মগরা ২ পঞ্চায়েত। ওই সব পঞ্চায়েতের কিছু আধিকারিকের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক কারণে তহবিল খরচ হয়নি।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রতিকূলতা কিছু থাকলে তা দ্রুত কাটিয়ে ওই সব পঞ্চায়েতকে তহবিল সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরুও করেছে।” তিনি জানান, রাজ্য অর্থ কমিশনে পঞ্চায়েতগুলির সম্মিলিত ভাবে অন্তত ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ খরচ করে শংসাপত্র দেওয়ার নিয়ম। একক ভাবে কোন পঞ্চায়েত তা না পারলেও গোটা জেলাই পরবর্তী কিস্তি থেকে বঞ্চিত হবে।
তহবিল খরচ না হওয়ার কারণ হিসেবে বিজেপি পরিচালিত খানাকুল ২ ব্লকের ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক ঘোড়া বলেন, “গোড়ায় গ্রামস্তরে রাজনৈতিক সমস্যা ছিল। তা কাটিয়ে কাজের পরিকল্পনা এবং দরপত্র ডাকা হয়েছে। এ বার দ্রুত কাজ শুরু হবে।” একই কথা জানিয়েছেন রাজহটি ১ পঞ্চায়েতের প্রধান টুটু মণ্ডল, আরামবাগের তৃণমূল পরিচালিত মায়াপুর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান অলোক সাঁতরা, হরিণখোলা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান জুলেখা বেগম, বাতানলের দিলীপ রায় প্রমুখ। ওই পঞ্চায়েতগুলিও তালিকায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রাম সংসদ থেকে উন্নয়নের নতুন প্রস্তাব উঠে আসার কথা। রাজনৈতিক কারণে বহু পঞ্চায়েতে গ্রাম সংসদের সভা হচ্ছে না। ফলে, যথাযথ উন্নয়নমূলক কাজও হচ্ছে না। পঞ্চায়েতগুলি নিজেদের ইচ্ছমতো সরকারি টাকা ব্যয় করছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পঞ্চায়েতগুলিকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিডিও-রা।