Dengue

ডেঙ্গি: বাড়ি বাড়ি অভিযান শুরু শীঘ্রই

গত কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গি শ্রীরামপুরকে ভুগিয়েছে। বছর দুয়েক উত্তরপাড়া শহরেও ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়ায়। দুই পুরসভা কর্তৃপক্ষেরই দাবি, ডেঙ্গি প্রতিরোধে তাঁরা তৈরি।

Advertisement

সুদীপ দাস

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৯:২৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

Advertisement

গত বছর এই সময় পর্যন্ত হুগলি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই বেশি ছিল। সেই তুলনায় এ বার এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা কার্যত অর্ধেক বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত আক্রান্ত ১০০ জনের কাছাকাছি। তাঁদের বেশিরভাগই বাড়িতে সুস্থ হয়েছেন। অল্প কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। শনিবার ওই স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দু’-একজন চিকিৎসাধীন থাকতে পারেন।’’

তবে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তারা হাত গুটিয়ে বসে নেই বলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। জেলা প্রশাসনের দাবি, রাজ্য ও কেন্দ্রের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে বর্ষার আগেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় নামা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গেও বৈঠক করে ডেঙ্গি আক্রান্তদের তালিকা নিত্যদিন দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১০ জুন থেকে পুরসভার পাশাপাশি বিভিন্ন পঞ্চায়েতের তরফেও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে মানুষকে সচেতন করা হবে। কোনও বাড়িতে কারও জ্বর হয়েছে কি না, এলাকা পরিষ্কার হচ্ছে কি না, সেই সমস্ত খোঁজখবর নেবেন তাঁরা। এই কর্মসূচি চলবে আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গি শ্রীরামপুরকে ভুগিয়েছে। বছর দুয়েক উত্তরপাড়া শহরেও ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়ায়। দুই পুরসভা কর্তৃপক্ষেরই দাবি, ডেঙ্গি প্রতিরোধে তাঁরা তৈরি। উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব জানান, রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থার (সুডা) নির্দেশিকা মেনে প্রস্তুতি চলছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের তথ্য সংগ্রহ করবেন পুরকর্মীরা। এ জন্য মোট ১৭৯টি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রতি দলে দু’জন থাকবেন। ৫টি দল পিছু ১ জন সুপারভাইজ়ার থাকবেন। গত মঙ্গল ও বুধবার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

শ্রীরামপুরের উপ-পুরপ্রধান উত্তম নাগ বলেন, ‘‘অনেক আগে থেকেই আমরা সাফাইয়ে জোর দিয়েছি। পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের তথ্য সংগ্রহ করবেন। অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’

হুগলি-চুঁচুড়ার পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী জানান, ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি পরিত্যক্ত সামগ্রী সংগ্রহের কাজ চলছে। পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর হিমাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বার বার সচেতন করার পরেও বহু বাড়িতেই অব্যবহৃত বহু সামগ্রী খোলা জায়গায় পড়ে থাকে। বর্ষায় তাতে জল জমে মশা জন্মায়। না-সরালে পুরকর্মীরা গিয়ে সেই সব সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করছেন।’’

এই পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার জন্য ১৬০টি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রতি দলে থাকবেন দু'জন করে স্বাস্থ্যকর্মী। চারটি পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিখরচায় ডেঙ্গি নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকালে রক্ত পরীক্ষা করা হলে দুপুর তিনটের মধ্যে রিপোর্ট মিলবে বলে হিমাংশু জানান।

গত বছর হুগলির বিভিন্ন পুরসভা ড্রোনের মাধ্যমে বহুতলের ছাদে নজরদারি চালিয়েছিল জমা জল এবং মশার আঁতুড়ঘর খুঁজতে। এ বারেও ওই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।

তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement