বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
৩৫২ বছরে পড়ল আমতার খালনা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো। সেই সময় ওই এলাকার জমিদার ছিলেন রামকল্প বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পুত্র
সরবেস্বর এই পুজো শুরু করেন। এর পর থেকে বংশপরম্পরায় চলে
আসছে আরাধনা।
জগদ্ধাত্রীর সঙ্গেই বংশের কুলদেবতা শীতলা ও বংশের পুরাতন মন্দিরে শিবের পুজোও হয়। বাড়ির ঠাকুর দালানে জন্মাষ্টমীর দিন থেকে শুরু হয় প্রতিমা তৈরি। পরিবারের রীতি মেনে মাটির প্রতিমাকে
সোনার গয়না দিয়ে সজানো হয়। নবমীতে চারটি চালকুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হয়। পারিবারিক পুজো হলেও গ্রামের মানুষের যোগদান
চোখে পড়ার মতো।
পুজো নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা গল্প-কথা প্রচলিত আছে। স্থানীয়রা জানান, একবার শিল্পী প্রতিমার এক পায়ে আলতা পরাতে ভুল গিয়েছিলেন। ওই রাতেই শিল্পী দেবীর স্বপ্ন পান। গভীর রাতেই আলতা পরিয়ে দিয়ে যান তিনি।
একবার, বন্যার ফলে এলাকায় চালকুমড়ো মিলছিল না। অতি কষ্টে দু’টি চাল কুমড়ো জোগাড় হলেও আর দু’টি কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না। শোনা যায়, এক অপরিচিত বৃদ্ধা আনাজ বিক্রেতা দু’টি চালকুমড়ো বাড়ির কর্তাদের দিয়ে যান। পরিবারের লোকেদের বিশ্বাস, বৃদ্ধা স্বয়ং জগদ্ধাত্রীরই রূপ ছিলেন।
পরিবারের এক সদস্য পূজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুজোয় দেড় মণ আতপ চালের অন্নভোগ হয়। এ ছাড়াও মাছ, লুচি, ক্ষীর, পায়েস ও পিঠে দেওয়া হয় প্রতিমাকে। সন্ধি পুজোয় ১০৮টি প্রদীপ জ্বেলে আরতি হয়। অষ্টমী ও নবমীর পরে রীতি মেনে ধুনো পোড়া হয়। দশমীতে ৯ জন মহিলা মাকে সিঁদুর পরিয়ে বরণ করেন। সিঁদুর খেলা চলে। পরে পরিবারের নিজস্ব পুকুরে বিসর্জন
হয় প্রতিমার।”