উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝুলছে তালা। নিজস্ব চিত্র।
একমাত্র চিকিৎসক ছুটিতে। তাই পরিষেবা বন্ধ গুপ্তিপাড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে! গত ৪ এপ্রিল থেকে এমনই চলছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। উন্নত মানের পরিষেবার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এমন কোনও আশ্বাস মেলেনি।
গুপ্তিপাড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেশ কয়েক বছর আগে তৈরি হয়। গুপ্তিপাড়া-১, ২, চরকৃষ্ণবাটী এবং সোমরা পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। তাঁদের অভিযোগ, এখানে চিকিৎসক মাত্র এক জন। তা-ও নিয়মিত আসেন না। ফলে, চিকিৎসককে না-পেয়ে বহু সময়েই ফিরে যেতে হয় গ্রামবাসীদের। একটু জরুরি দরকার হলেই কয়েক কিলোমিটার দূরের জিরাট অথবা পার্শ্ববর্তী পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা হাসপাতালে ছুটতে হয়।
শুক্রবার দুপুরে গুপ্তিপাড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালাবন্ধ ছিল। বন্ধ কোলাপসিবল গেটে হাতে লেখা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৪ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসক আসবেন না। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বলাগড়) জয়দেব বড়ুয়া বলেন, ‘‘এক জন চিকিৎসক নিয়মিত ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসেন। তবে তিনি কয়েক দিনের ছুটিতে আছেন।’’ পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের প্রশ্নে ওই স্বাস্থ্যকর্তার প্রতিক্রিয়া, ‘‘বর্তমানে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ কি না, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
গ্রামবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, প্রায় এক বছর ধরে চিকিৎসা মেলে না বললেই চলে। সনাতন চট্টোপাধ্যায় নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা খুব খারাপ। এক জন চিকিৎসক মাঝেমধ্যে কিছুক্ষণের জন্য আসেন। কবে আসেন, কখন যান, কেউ জানে না। বেশির ভাগ সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালাবন্ধই থাকে। বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে অন্যত্র চলে যান।’’ সনাতনের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে মদের ঠেক বসে। কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। বলাগড়ের বিজেপি নেতা সুভাষ হালদারেরও অভিযোগ, ‘‘এলাকার ৪৫-৫০ হাজার মানুষ এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকেন। অথচ, তাঁরা এখানে কোনও পরিষেবা পান না। আলোর ব্যবস্থা নেই এখানে। এখন তো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা ঝুলছে। ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
চিকিৎসা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তার সুরাহা হয়নি। তবে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে সাধারণ মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর তা জানাতে ভোলেনি।