গুপ্তিপাড়ার রথের মেরামতি চলছে। নিজস্ব চিত্র।
মাহেশ ছাড়াও হুগলির গুপ্তিপাড়ার রথও ঐতিহ্যবাহী। সেই রথের আমূল সংস্কারের আর্জি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে দরবার করার সিদ্ধান্ত নিলেন গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবনচন্দ্র জিউ মঠ ও মন্দির কর্তৃপক্ষ। মঠ ও এস্টেটের প্রশাসক গোবিন্দানন্দ পুরী শুক্রবার বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর আগে কিছুটা ভাল ভাবে সংস্কার হয়েছিল। এখন পূর্ণাঙ্গ মেরামতের দরকার। রাজ্য সরকার টাকা দিলে ফের একবার সংস্কার মনের মতো হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে এ ব্যাপারে আমরা লিখিত আর্জি জানাব।’’
মঠ সূত্রের খবর, এ বারেও তাঁরা চলনসই ভাবে রথ মেরামত করছেন। আগামী ৭ জুলাই রথযাত্রা। তাঁরা চান, এ বার না হলেও রথযাত্রা মিটে গেলে সরকার রথের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারে উদ্যোগী হোক। বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ শীল এই এলাকা থেকেই নির্বাচিত। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আবেদন এলে সরকার অবশ্যই ভাববে।’’
মঠ কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতি বছর রথযাত্রার আগে তাঁদের তহবিল থেকে জোড়াতালি দিয়ে রথ সারাই করা হয়। কিন্তু তাঁদের আর্থিক সংস্থান বেশি না থাকায় পূর্ণাঙ্গ সংস্কার সম্ভব হয় না। যেটুকু অর্থ খরচ করা হয়, তাতেও তহবিলে টান পড়ে। সেই কারণেই তাঁরা চান, রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে এগিয়ে আসুক। তাঁরা জানান, এ বছর গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রার ২৮৫তম বছর। এই রথ আগে ছিল ১৩ চূড়াবিশিষ্ট। ১৯৫৭ সালে সংস্কারের সময় চারটি চূড়া বাদ দেওয়া হয়। এখন রথ নয় চূড়াবিশিষ্ট। মঠের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১০ লক্ষ টাকায় ২০১২ সালে রথটি সংস্কার করা হয়েছিল। তখন রথের খুঁটি, দু’টি চাকা বাবলা কাঠের পরিবর্তে শাল কাঠের করা হয়।
মন্দিরের তরফে গোপাল কর্মকারের দাবি, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে তাঁরা জেনেছিলেন, ওই টাকায় রথের ৪০ শতাংশ সংস্কার করা গিয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘কাঠের রথ। চাকাও কাঠের। প্রতি বারেই রথের হাল খারাপ হয়ে পড়ে। গত দু’বছরে ১০টি চাকায় লোহার বেড়ি পরানো হয়েছে। এ বার ৬টি চাকা ও ৪টি চূড়া মেরামত করা হয়েছে। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। চাকায় লোহার বেয়ারিং লাগানো গেলে ভাল হয়। তাতে বিপদের ঝুঁকি থাকবে না।’’