স্কুলের সামনে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। ছবি: সুব্রত জানা।
প্রধান শিক্ষককে স্কুলে ফেরানোর দাবিতে সোমবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বাউড়িয়ার কাজিরচড়া সাউথ প্রাইমারি স্কুলের এই ঘটনার জেরে এ দিন পড়ুয়া এসেছিল পাঁচ জন। আর শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন ২ জন। তবে এ দিন পড়ুয়ারা মিড ডে মিল পেয়েছে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সোমনাথ সাউয়ের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা দফতরে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্কুলের এক শিক্ষিকা। তাঁকে সমর্থন করেছিলেন অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারও। এরপরেই ওই প্রধান শিক্ষকের বদলির নির্দেশ
দেওয়া হয়।
গত ২৮ জুন সোমনাথ উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের চকভগবতীপুর মাখালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করেন। এই খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পরেই গত শনিবার স্কুল চত্বরে অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। পড়ুয়ারা স্কুলে আসেনি। তারপর ফের সোমবার একই ভাবে বিক্ষোভ চলে।
এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ২৩১। প্রধান শিক্ষক ও দু’জন পার্শ্ব শিক্ষক সহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা সংখ্যা ৯ জন। প্রধান শিক্ষক চলে যাওয়ায় তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ জনে। অভিভাবকদের কথায়, ‘‘ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসার পরে ভাল করে ক্লাস হয়। তার আগে একেবারে পড়াশোনা হত না। শিক্ষকেরা ঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না।’’ অন্য এক অভিভাবিকার ক্ষোভ, ‘‘ক্লাসে না পড়িয়ে ফোন কথা বলতেন শিক্ষকেরা। প্রধান শিক্ষক এসে সব বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সরানো হল।’’
২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর থেকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন সোমনাথ সাউ। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘ স্কুল ভীষণ অগোছোলা ভাবে চলছিল। শিক্ষক-শিক্ষিকারা ফোন নিয়ে ক্লাসে যেতেন। যখন তখন বনভোজন করবেন বলে ক্লাস নিতেন না। কেউ নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসেন না। প্রার্থনায় কেউ যোগদান করেন না। সে সব বন্ধ করাতেই মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বদলির সিদ্ধান্ত
মেনে নিয়েছি। অভিভাবকেরা কী চাইছেন, কেনই বা তাঁরা বিক্ষোভ করছেন, জানি না।’’
স্কুলের শিক্ষকেরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন শিক্ষিকারা। তাই তাঁকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত হবে। অভিভাবকদের বিক্ষোভে কোনও ফল হবে না।’’