ফলেছে আপেল। নিজস্ব চিত্র
কাশ্মীর-হিমাচল নয়, এই গরমে আপেল ফলেছে আরামবাগেই!
দেড় বছর আগে মলয়পুর-২ পঞ্চায়েতের চকবেশিয়ায় এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে বিশেষ প্রজাতির আপেল চাষ হয়েছিল ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে। সেই বাগানে এ বার ফল ধরতে শুরু হয়েছে। আপেল বাগান দেখতে ভিড়ও জমছে রোজ।
এই সাফল্যে গর্বিত পঞ্চায়েত প্রধান শাহ মহম্মদ রফিক বলেন, “জেলার এটাই প্রথম আপেল চাষের উদ্যোপগ। বিডিওর তত্বাবধানে ২০২১ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে ১০০ দিনের কাজে প্রায় ২০০টি আপেল চারা লাগিয়ে এই বাগান করা হয়। আশা করচি, স্থানীয় বাজারগুলিতে ব্যাপক চাহিদা হবে।” একই সঙ্গে তাঁর খেদ, “১০০ দিনের কাজ প্রকল্পটি রাজ্যে এখন বন্ধ। নইলে আপেলের আরও বাগান করার পরিকল্পনা ছিল। আমরা প্রকল্পটির সফল রূপায়ণ করে দেখাতে পেরেছি।”
হিমাচলপ্রদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে ওই বাগানে আপেল চারা লাগানো হয়েছিল। এ কথা জানিয়ে আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গাছে ফল আসায় আমরা খুব আশাবাদী। পরবর্তী সুযোগ-সুবিধা মতো এখানে আরও আপেল চাষ করা যেতে পারে। স্বাদ এবং গুণমান বজায় রাখতে পারলে স্থানীয় বাজারগুলিতে এই আপেলের চাহিদা বাড়বে বলেই আশা করছি।’’
লাল নয়, ওই বাগানে ফলছে ‘হরিমোহন ৯৯’ প্রজাতির সবুজ আপেল। আরামবাগের বাজারগুলিতে সবুজ আপেলের চাহিদা রয়েছে। বিডিও জানান, প্রকল্পের লক্ষ্য, বাগানগুলিকে ঘিরে কর্মসংস্থান এবং সংশ্লিষ্ট রূপায়ণকারী সংস্থা তথা পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল পুষ্ট করা। সর্বোপরি স্থানীয় অনেকেই এই বাণিজ্যিক চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বনির্ভরতার দিশা পাবেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপেল বাগান করতে প্রথম পর্যায়ে উষ্ণ অঞ্চলে চাষ উপযোগী তিনটি প্রজাতির (আন্না, গোল্ডেন ডোরসেট এবং হরিমোহন ৯৯) চারা এনে লাগানো হয়। প্রতিটি গাছের জন্য তিন ফুট বাই তিন ফুট গর্ত করে তাতে জৈব সার, নিম খোল, কীটনাশক, বালি ও নুড়িপাথর মেশানো হয়। হরিমোহনে ফল ফলেছে। তিনটি প্রজাতির মধ্যে এই মাটিতে এবং আবহাওয়ায় যে প্রজাতির আপেলে স্বাদ, মিষ্টতা-সহ গুণমান বজায় থাকবে সেই প্রজাতির চারাই ভবিষ্যতে বেশি লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাকি দুই প্রজাতির ফল আসার কথা তিন বছরের মাথায়। তিনটি প্রজাতিরই প্রতি গাছ পিছু জুন-জুলাই মাস নাগাদ ৫০-৬০টি ফল মিলতে পারে।