উদ্ধারের টাকা সরকারি কর্মীর হাতে তুলে দিল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
জালিয়াতির ‘নতুন চক্র’। মুম্বই অপরাধ দমন শাখার নাম করে সরকারি কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল হাওড়ায়। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের অন্তর্গত দাসনগর থানার পুলিশের চেষ্টায় অভিযোগকারীর অধিকাংশ টাকা উদ্ধার হয়েছে। চলছে তদন্ত।
হাওড়ার দাসনগর থানার কোনা মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা সুমন্তভকুমার বিশ্বাসের অভিযোগ, গত ৩১ অগস্ট একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পান। পেশায় রাজ্য সরকারের কর্মচারী সুমন্ত ফোন ধরতেই ও প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘‘মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বলছি। আপনার নামে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। তদন্ত হচ্ছে অনলাইনে।’’ অবাক হন সুশান্ত। ঘাবড়েও যান। তাঁকে বলা হয়, তাঁর নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে। এর পাশাপাশি সুশান্তের মোবাইলে একাধিক মেসেজ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়। আরও ঘাবড়ে যান সুমন্ত। এর পর তিনি ‘অফিসারের’ দাবি মতো কয়েক দফায় সাত লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার টাকা মোবাইল ব্যাঙ্কিয়ের মাধ্যমে একটি অ্যাকাউন্টে পাঠান। কিন্তু আরও আরও টাকা পাঠানোর দাবি আসতে থাকে। তখনই সন্দেহ হয় অভিযোগকারীর। তিনি আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই আইনজীবী যখন সংশ্লিষ্ট ফোন নম্বরে যোগাযোগাযোগ করে কথা বলা শুরু করেন, তার কিছু ক্ষণের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আর ওই নম্বরে যোগাযোগ করা যায়নি। সুমন্ত বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর দাসনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
তদন্তে নেমে পুরো বিষয়টি এনসিআরপি বা ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে জানায় পুলিশ। এর পর আস্তে আস্তে ছয় লক্ষ এগারো হাজার টাকা ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে পুলিশ। শুক্রবার হাওড়া আদালত মারফত ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সুমন্তকে।
হাতিয়ে নেওয়া টাকার বেশিরভাগ অংশ হাতে পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ওই রাজ্য সরকারি কর্মচারী। এখনও এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, বড় কোনও চক্র কাজ করছে। অভিযুক্তদের ধরতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।