আরামবাগে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ডিপোতে বাসের দেখা মিলল না বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচির সভায় লোক নিয়ে যেতে বৃহস্পতিবার সরকারি বাস তুলে নেওয়া হল হুগলির আরামবাগ থেকে। অন্যত্র বেসরকারি রুটের বাসও নন্দীগ্রামে যায় শাসক দলের পতাকা সাজিয়ে। হয়রান হলেন যাত্রীরা।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের আরামবাগ ডিপো থেকে ২০টি বাস এ দিন নন্দীগ্রামে যায় বলে খবর। ফলে, ওই ডিপো ছিল শূন্য। প্রখর রোদ এবং প্রবল গরমের মধ্যে সকাল থেকে কলকাতাগামী বাস না পেয়ে হয়রান হন যাত্রীরা। গন্তব্যে পৌঁছতে কেউ ট্রেন ধরেন, কেউ গাদাগাদি করে বেসরকারি বাসে ওঠেন। দুপুরে ফোনে আরামবাগ শহরের বাসিন্দা সন্দীপ দে’র ক্ষোভ, ‘‘পরিবারের লোকেরা মিলে বেঙ্গালুরু যাচ্ছি। সাঁতরাগাছি থেকে ট্রেন ধরব। সরকারি বাসের জন্য সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষার পরে অবশেষে বেসরকারি বাস ধরলাম। পরিষেবা বজায় রেখে বাস নেওয়া উচিত ছিল।’’
বাস না পেয়ে যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে জানিয়ে ওই ডিপোর এক কর্মী বলেন, ‘‘কলকাতাগামী ২০টি বাসই তুলে নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে একটিও বাস কলকাতায় যায়নি। অতীতে এমন কোনও দিন হয়নি। তবে, লালগোলা বা অন্যত্র থেকে যে সরকারি বাস যাতায়াত করে, সেগুলি চলছে।’’
নন্দীগ্রামের সভার জন্য অবশ্য আরামবাগ মহকুমার বেসরকারি বাসে হাত পড়েনি। উল্টে, সরকারি পরিষেবা না থাকায় এ দিন তাদের ব্যবসা তুলনামূলক ভাল হয়েছে বলে বিভিন্ন বাসমালিক সংগঠনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দূরপালার বাসমালিক সংগঠনের (হুগলি ইন্টার রিজিয়ন) সম্পাদক গৌতম ধোলে বলেন, ‘‘দূরপাল্লার কোনও বাস নেওয়া হয়নি। পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক নিয়ে যেতে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ডিরেক্টর তথা গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদারের ব্যবস্থাপনায় কিছু সরকারি এবং লাক্সারি বাস ভাড়া করা হয়। এই বিষয়ে এবং মানুষের ভোগান্তি নিয়ে মানসের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তারও জবাব দেননি। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ফোন ধরে ‘সভায় আছি’ জানিয়ে কেটে দেন।
নন্দীগ্রামের ওই কর্মসূচি বাদেও কলকাতায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও শ্রীরামপুর, চন্দননগর এবং চুঁচুড়া থেকে বেশ কিছু রুটের বাস যায় বলে জানা গিয়েছে। ফলে, কর্মস্থলে যাতায়াতে যাঁরা রুটের বাসের উপরে নির্ভরশীল, পথে বেরিয়ে তাঁরা রীতিমতো সমস্যায় পড়েন।
জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠনের কর্তা অজিত খান বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে জেলা সদর থেকে ১০টি বড় বাস গিয়েছে। কলকাতায় কৃতীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জায়গা থেকে গিয়েছে ১১টি বাস।’’