ধনতেরসের আগে কেনাকাটা। বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা
গত এক বছর ধরে সোনা-রুপোর দাম ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীদের দাবি, কোভিড-পরবর্তী সময়ে বিক্রিও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, ধনতেরসে ব্যবসায়ীদের আশা জোগাচ্ছে বিয়ের মরসুম। এ দিন কেনাকাটা ভালই হবে বলে আশাবাদী সোনা-রুপোর ব্যবসায়ীরা। দুই জেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশ জানিয়েছেন, সোনা না পারলেও রুপোর কয়েন, বাসন কেনার ইচ্ছা রয়েছে। আর একান্তই তাও না পারলে ভরসা পিতল, কাঁসায়।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কেনাকাটা শুরু হয়েছে বলে জানান উলুবে়ড়িয়ার বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী কৌশিক নন্দী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের হাতে পয়সা অনেক আছে, এমন নয়। তবে অনেকেই হালকা সোনার জিনিসের উপর ভরসা করছেন। গত বছরের তুলনায় ভরি পিছু সোনার
দাম প্রায় ১০ হাজার টাকা বেড়েছে। ফলে বিক্রি কেমন হবে, এখনই বলা যাচ্ছে না।’’
ছোট ব্যবসায়ীদের কপালে ভাঁজ। তাঁদের আশঙ্কা, দামবৃদ্ধির কারণে অনেক মধ্যবিত্ত খদ্দেরই সাধ থাকলেও সোনা কিনে উঠতে পারবেন না।
তাই রুপোর গয়নার পাশাপাশি থালা, বাটি, গ্লাস বা কয়েনের চাহিদা বাড়ছে। যদিও রুপোর দামও দ্রুত বাড়ছে। খদ্দের টানতে ব্যবসায়ীার পাল্লা
দিয়ে বিজ্ঞাপনও দিতে শুরু করেছেন। রয়েছে নানা রকমের অফারও।
আরামবাগের সোনা-রুপোর গয়নার দোকানেও সাজ সাজ রব। শহরের প্রাচীন গয়নার দোকানগুলোর মধ্যে অন্যতম পি সি সেন রোডের ব্যবসায়ী সুজিত দে বলেন, “ভাল বাজার হবে বলেই আশা। বছর ১০-১২ ধনতেরসে কেনাকাটার
চল ক্রমশ বাড়ছে। সোনার চেন,
চিক, নেকলেস কিনছেন মানুষ।
অন্তত রুপোর জিনিস বা গয়নাও অনেকে কিনছেন।’’
বিক্রি বাড়ার আশায় বুক বাঁধছেন কলকাতার খান চারেক বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সংস্থার শাখা ম্যানেজার এবং কাঁসা-পিতলের ব্যবসাদাররা। শহরের আদি ধাতু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অতীতে কিছু চালকল মালিক-সহ উচ্চবিত্তের মানুষ ধনতেরস উপলক্ষে সোনা, বাসন কিনতেন। কিন্তু এখন সব স্তরের মানুষের কাছেই এ দিনে কেনাকাটা সারেন।
চন্দননগরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন গয়নার পাশাপাশি রুপোর বাসনের কেনাকাটা করছেন অনেকে। অনেকে স্টিল বা পেতলের বাসন কিনেও সাধ মেটাচ্ছেন। স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদ্যুৎ কর্মকার বলেন, ‘‘করোনার আগের সময়ের সঙ্গে এই সময়ের বিস্তর ফারাক। তবে গত বছর থেকে বিক্রি একটু বেড়েছে। এটাই স্বস্তির।’’
উত্তরপাড়ার তরুণী মধুমিতা রায়ের কথায়, ‘‘নভেম্বরের শেষে আমার বিয়ে। তাই ধনতেরসেই গয়না কেনার পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে।’’