অবিরাম: চুল্লি পরিষ্কার করার ফুরসত নেই। বেরোচ্ছে কালো ধোঁয়া। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
দু’টি চুল্লির একটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন। এত দিন কাজ চলছিল অন্য চুল্লিটি দিয়ে। কিন্তু মৃতদেহের চাপে সেই চুল্লির চিমনি গরম হয়ে আগুন ধরে যাওয়ায় মঙ্গলবার আতঙ্ক ছড়াল কোভিড শ্মশান হিসেবে চিহ্নিত হাওড়ার শিবপুর শ্মশানঘাটে। যার জেরে কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ রইল শবদাহ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটানা দাহকাজের চাপ সহ্য করতে না পেরেই চুল্লিটি অত্যধিক মাত্রায় গরম হয়ে গিয়েছিল। তবে সেটির মারাত্মক কোনও ক্ষতি হয়নি। পরে সেটি ঠান্ডা করে ফের দাহকাজ শুরু করা হয়।
গত বছরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সংক্রমণ ঠেকাতে শিবপুর শ্মশানেই করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার করা হবে। তার পর থেকে শুধু হাওড়ার নয়, করোনায় মৃত কলকাতার বাসিন্দাদের দেহও শিবপুর শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবপুর শ্মশানে থাকা দু’টি চুল্লির মধ্যে একটি রাখা হয়েছিল কোভিডে মারা যাননি, এমন ব্যক্তিদের দাহ করার জন্য। কিন্তু সম্প্রতি সেটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। কারণ, শহরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্মশান বাঁশতলাঘাট গত দেড় বছর ধরে বন্ধ। তাই নন-কোভিড দেহ সৎকারের একমাত্র শ্মশান, সালকিয়ার বাঁধাঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লিই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়ার বাসিন্দাদের কাছে।
অন্য দিকে, কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকারের জন্য শিবপুরই এখন একমাত্র শ্মশান হওয়ায় শুধু গোটা হাওড়া নয়, কলকাতার দেহগুলিও মাঝে মাঝে এখানে নিয়ে এসে দাহ করা হচ্ছে। ওই শ্মশানের এক কর্মী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে মৃতদেহের চাপে চুল্লি বন্ধ রাখা যায়নি। তার ফলেই চুল্লির ভিতরে থাকা ফারনেস গরম হয়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটে।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ অফিসার বললেন, ‘‘পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ হবে, আগে বুঝতে পারিনি। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি দেহ আসছে এই শ্মশানে। টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে ফারনেস চলছে। সেটি এত গরম হয়ে যাচ্ছে যে, চিমনি গরম হয়ে হাল্কা আগুনও বেরিয়েছে। তবে ক্ষতি বিশেষ কিছু হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারেরা পরীক্ষা করে দেখবেন, চিমনি পুরোপুরি ঠিক আছে কি না।’’
কিন্তু এই চুল্লিটি খারাপ হয়ে গেলে তো কোভিডে মৃতদের দাহ করার জায়গাই থাকবে না? পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘শিবপুরের আর একটি চুল্লি খুব শীঘ্রই সারিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয়টি কোনও কারণে খারাপ হলে প্রথমটিতেই ফের কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকার করা হবে।