কেন্দ্রের নির্দেশ, টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাড়ি বানানোর কাজ শেষ করতে হবে। প্রতীকী ছবি।
আগামী মাস থেকেই ‘আবাস প্লাস’ (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের পরবর্তী সংযোজন) প্রকল্পের উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া শুরু হবে। কেন্দ্রের নির্দেশ, টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাড়ি বানানোর কাজ শেষ করতে হবে। ‘অযোগ্য উপভোক্তা’র নাম বাতিলের চূড়ান্ত সময়সীমাও (২৫ ডিসেম্বর) বেঁধে দিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এর জেরে হাওড়া ও হুগলি— দুই জেলা প্রশাসনেই তৎপরতা তুঙ্গে।
হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়া প্রকল্পে জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েত থেকে মোট ২ লক্ষ ২৬ হাজার ২৪টি পরিবারের নাম নথিভুক্ত হয়েছে ‘আবাস প্লাস’-এ। যার মধ্যে অনেকে প্রকল্পের অযোগ্য বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। সেই তালিকা যাচাই করার কাজ এতদিন ঢিমেতালে চলছিল বলে অভিযোগ। ফলে, সময়ে প্রকৃত উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। গোটা কাজ হচ্ছে একটি পোর্টালে।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার পর্যন্ত উপভোক্তাদের আধার সংযোজন সম্পূর্ণ হয়েছে মাত্র তিনটি পঞ্চায়েতে। জবকার্ড যাচাই সম্পূর্ণ হয়েছে ১৭টি পঞ্চায়েতে। প্রকল্পের অনুপযুক্ত চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে ১২টি পঞ্চায়েতে।
তবে, জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘কাজে জোর দিতে বলা হয়েছে সমস্ত স্তরে। ফলে, সময়ের মধ্যেই অনেকটা কাজ হয়ে যাবে। কেন্দ্রের নির্দেশ অবশ্যই পালন করা হবে।’’
একই দাবি হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তারও। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ পরিবার ওই প্রকল্পের উপভোক্তা হিসেবে বাছাই হয়েছে। প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে বলা হয়েছে, তারা যেন ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন পঞ্চায়তে গ্রামসভার বৈঠক ডেকে তালিকা অনুমোদন করিয়ে তা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করে দেয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় গ্রামের যে সব গরিব মানুষের নাম ছিল, তাঁদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। রাজ্যে অবশ্য প্রকল্পটি ‘বাংলা আবাস যোজনা’ নামে চালু ছিল। পরে দেখা যায়, বহু গরিব গৃহহীন মানুষ আছেন, যাঁদের নাম ২০১১ সালের তালিকায় ছিল না। ফলে, তাঁরা বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। তাঁদের জন্য ২০১৮ সালে কেন্দ্র ফের একটি সমীক্ষা করে। সেই তালিকার ভিত্তিতে গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির জন্য ‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পটি করে কেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এ রাজ্য থেকে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় কেন্দ্র প্রশ্ন তোলে। সেই বেনিয়মগুলি যাতে আবাস প্লাস প্রকল্পে না হয়, সে জন্য বেশ কিছু নিয়মকানুন মানার নির্দেশিকা দেয় কেন্দ্র।