পোড়া বাড়িটির ধ্বংসস্তূপ। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার লিলুয়ায় চকপাড়া নতুনপল্লিতে অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান রাজ্য ফরেন্সিক দলের বিশেষজ্ঞেরা। এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর দেবাশিস সাহার নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের দল পোড়া বাড়িটির ধ্বংসস্তূপ থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। পরে দেবাশিস জানান, সংগ্রহ করা বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার পরেই বোঝা যাবে, কী কারণে আগুন লেগেছিল। যদিও এলাকাবাসী এ দিনও ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি করেছেন। কারণ, তাঁরা ঘটনাটিকে নিছক দুর্ঘটনা বলে মেনে নিতে নারাজ।
রবিবার গভীর রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় একটি দরমার বাড়ি। কাঠা দুয়েক জমির উপরে তৈরি ওই বাড়িতে তখন ঘুমোচ্ছিলেন জমির মালকিন, ৮৫ বছরের আঙুরবালা দলুই, জামাই মধুসূদন সানা ও মেয়ে কমলা সানা। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান শাশুড়ি-জামাই। অগ্নিদগ্ধ কমলাকে উদ্ধার করে পুলিশ হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কমলার দেহের উপরের অংশের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। জেলা প্রশাসন থেকেও তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে এলাকাবাসী ভিড় করেন। তল্লাশি চালানোর সময়ে কিছু পোড়া টাকা ও গয়না উদ্ধার হয়। সেই সব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ভিড় করা এক প্রত্যক্ষদর্শী শর্মিষ্ঠা বণিক বলেন, ‘‘চোখের সামনে দু’জন পুড়ে মারা যাওয়ার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছি। সব থেকে বড় কথা, আগুন লাগার পরে ওই বাড়ির কেউ এতটুকু চিৎকার করলেন না কেন? এটা তো আগে জানা দরকার।’’ এলাকাবাসীর দাবি, কী করে আগুন লেগেছিল, তার ফরেন্সিক রিপোর্ট না জানা পর্যন্ত আতঙ্ক কাটবে না। ভস্মীভূত হওয়া বাড়িটির লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দা সঞ্জয় সামন্ত বললেন, ‘‘এটা নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হয় না। কেউ সম্পত্তির লোভে আগুন লাগাতেও পারে। পুলিশ তদন্ত করে তা বার করুক, এটাই দাবি।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করছি। ফরেন্সিক তদন্ত হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ঠিক ভাবে সব জানা যাবে।’’