Cricket Match of Blind

মৃত বন্ধুর ইচ্ছাপূরণে দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট

রবি চাবি তৈরির কাজ করেন। সুকুমার চন্দননগর কমিশনারেটের কনস্টেবল। চুঁচুড়ার বাসিন্দা দু'জনেই দৃষ্টিহীনদের নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪৭
Share:

দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট প্রতিযোগীতার খেলার মুহূর্ত।

পাড়ার স্কুল মাঠে দৃষ্টিহীনদের নিয়ে তাঁর ক্রিকেট প্রতিযোগিতা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। মাসখানেক আগে রক্তের কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়ে মারা যান চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার যুবক সুজয় নাগ ওরফে টুকাই। রবিবার তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ করলেন দুই বন্ধু— রবি পাল ওরফে কাকা এবং সুকুমার উপাধ্যায়। কাপাসডাঙা সতীন সেন বিদ্যাপীঠের মাঠে পুরুলিয়া একাদশ ও ব্যান্ডেল একাদশের মধ্যে আয়োজিত হল বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচ।

Advertisement

রবি চাবি তৈরির কাজ করেন। সুকুমার চন্দননগর কমিশনারেটের কনস্টেবল। চুঁচুড়ার বাসিন্দা দু'জনেই দৃষ্টিহীনদের নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন। সেই সুবাদেই দু'জনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল টুকাইয়ের সঙ্গে। তাঁরা টুকাইয়ের ইচ্ছের কথা শুনেছিলেন। শীতের রোদ গায়ে মেখে বেশ কিছু মানুষ এ দিন দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট দেখতে মাঠে আসেন।

রবি বলেন, ‘‘গত বছর এই ম্যাচের জন্য চুঁচুড়া শহরে মাঠ পাইনি। অন্যত্র করেছিলাম। টুকাইদা জানতে পেরে ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।’’ সুকুমার বলেন, "এ বার করব বলেছিলাম। কিন্তু টুকাই চলে গেল। তাই ওঁর স্মৃতিতে এই আয়োজন।’’

Advertisement

টি-২০ ম্যাচের কথা থাকলেও পুরুলিয়া দলের ট্রেন ৩ ঘণ্টা দেরিতে আসায় ১২ ওভার করে মোট ২৪ ওভারের খেলা হয়। দুই দলে ৬ জন করে বি-১ (১০০ শতাংশ দৃষ্টিহীন) এবং ৫ জন বি-২ (৮০ শতাংশ দৃষ্টিহীন) খেলোয়াড় মাঠে নামেন। প্লাস্টিক বলে খেলা হয়। যার ভিতরে ছিল ছোট লোহার বল। তার ঝনঝন শব্দ শুনে ব্যাট করেন ব্যাটার। সেই শব্দেই ফিল্ডাররাও ফিল্ডিং করেন। বাংলার হয়ে দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেটে সাব-জুনিয়র খেলা অলরাউন্ডার চন্দন মান্ডি পুরুলিয়ার হয়ে মাঠে নেমেছিলেন।টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পুরুলিয়া একাদশ নির্ধারিত ১২ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ২১৬ রান তোলে। জবাবে ৭ ওভারে মাত্র ৫১ রানে অলআউট হয়ে যায় ব্যান্ডেল একাদশ। পুরুলিয়ার অপূর্ব হাজরা ১১৪ রান করে ম্যাচের সেরা হন। বিজয়ী দলকে ট্রফি এবং সর্বোচ্চ রান ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিকে ব্যাট উপহার দেওয়া হয়। পাশাপাশি, সকল খেলোয়াড়ের হাতে কিছু আর্থিক সাহায্যও তুলে দেওয়া হয়।

আর্থিক ভাবেও দৃষ্টিহীনদের পাশে দাঁড়ায় টুকাইয়ের ক্লাব সংহতি ক্রীড়া সংস্থা। ক্লাবের সম্পাদক আশিস পাল বলেন, ‘‘টুকাই দৃষ্টিহীনদের পাশে থেকে আমাদের ভাল কাজ করার পথ দেখিয়েছে। আমরা সেই পথে হাঁটার চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement