পান্ডুয়ার একটি দলীয় কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পান্ডুয়া
মঞ্চে দলের রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দর্শকাসন থেকে চেঁচিয়ে স্থানীয় মণ্ডল সভাপতিদের বিরুদ্ধে ঠিকমতো কাজ না করার অভিযোগ তুললেন এক বিজেপি কর্মী। একই সুর শোনা গেল এক নেতার গলায়। দু’জনেই লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পিছনে দলের একাংশের উদাসীনতাকে দায়ী করলেন। উঠল মণ্ডল কমিটিবদলের দাবিও।
রবিবার বিকেলে পান্ডুয়ায় জিটি রোডের ধারে একটি প্রেক্ষাগৃহে দলীয় কর্মসূচিতে আসেন সুকান্ত। সেখানে দলের অন্দর থেকে এমন ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে আসায় এই বিধানসভায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও একবার প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন অনেকে। এ নিয়ে পদ্ম শিবিরেও শোরগোল পড়েছে। সুকান্ত দুই নেতা-কর্মীর কথায় রা কাড়েননি। তিনি শুধু সকলকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন। একই কথা বলেনসংবাদমাধ্যমের কাছেও।
তবে, ওই সভায় উপস্থিত দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, ‘‘যাঁরা বলেছেন, তাঁরা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। খোঁজ নেব। হেরে গেলে গা বাঁচানোর জন্য অনেকেই অনেককথা বলেন।’’
২০১৯ সালে হুগলি লোকসভায় লকেট জিতেছিলেন। এ বার হেরেছেন। ভোটের আগে পান্ডুয়া ব্লক তথা গোটা লোকসভা জুড়েই লকেটকে নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। লকেটের বিরুদ্ধে পান্ডুয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার পড়ে। তাঁর সামনেও কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। দলীয় কর্মীদের একাংশ তেমন ভাবে লকেটের প্রচারে খাটেননি, এমন কথাও বিজেপির অন্দরে শোনা যায়।
এ দিন মঞ্চে সুকান্ত বলেন, ‘‘হুগলিতে বিজেপি হেরেছে। কিন্তু হুগলি জেলা থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি হারিয়ে যায়নি।’’ সংগঠনকে আরও মজবুত করার পরামর্শ দেন তিনি। পুরনো কর্মীদের আরও সক্রিয় হওয়া এবং নতুনদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে বলেন। তাঁর দাবি, ‘‘আগামী বিধানসভায় আমরা সরকারগঠন করব।’’
প্রেক্ষাগৃহ ভর্তি হয়নি। এ নিয়ে বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডল সভাপতি অমিতাভ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘ব্লকের সকলের জন্য নয়, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্লক নেতাকে নিয়ে এইবৈঠক হয়েছে।’’
সুকান্তের বক্তব্যের মাঝে যাঁদের কথা নিয়ে শোরগোল পড়েছে তাঁদের একজন দীপক শর্মা, অন্যজন সৌমেন দত্ত। সৌমেন দলের কর্মী।। দীপক জানান, তিনি ক্ষীরকুণ্ডী নিয়ালা নামাজগ্রাম অঞ্চলের বিজেপির আহ্বায়ক। তাঁর দাবি, লোকসভা নির্বাচনে লকেটদির সঙ্গে দলের বেশ কিছু নেতা শুধু ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। দলের হয়ে কোনও কাজ করেননি। দেওয়াল লেখা বা বাড়ি বাড়ি প্রচারেও যাননি। তিনি বলেন, ‘‘সবটাই দলকে জানিয়েছিলাম। দল কর্ণপাত করেনি। তাই লকেটদি হেরেছেন। সে কথাই রাজ্য সভাপতির কানে তুলেছি। তিনি জেলা বা ব্লকের সাংগঠনিক বিষয়ে জানেন না। তাঁকেও ভুল বোঝাচ্ছেন জেলার এক শ্রেণির নেতা।’’ দীপকের আরও বক্তব্য, দলের অনেকেই একই কথা বলছেন। কিন্তু জেলা সভাপতি কান দিচ্ছেন না।