হুগলির উপদ্রুত এলাকায় যেতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হিংসা-অশান্তির ঘটনার পরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে মানবাধিকার সংক্রান্ত ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ বা তথ্যানুসন্ধান কমিটি। সেই কমিটির সদস্যদের হুগলির উপদ্রুত এলাকায় যেতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। রিষড়ার সংঘর্ষ-প্রভাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল ওই কমিটি। কিন্তু রিষড়ায় ঢোকার অনেক আগেই তাদের আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক দড়ি টানাটানির পর শেষমেশ ফিরেই যেতে হয় কমিটির সদস্যদের। পুলিশের অবশ্য, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় কোনও প্রতিনিধি দলকেই উপদ্রুত এলাকায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
শনিবারই বাংলায় এসে পৌঁছেছেন পটনা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নরসিমা রেড্ডি-সহ কমিটির ছ’সদস্য। রাজ্যে এসেই তাঁরা রিষড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু অভিযোগ, শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটির কাছে দিল্লি রো়ডেই কমিটির কনভয় আটকে দেওয়া হয়। কমিটির তরফে পুলিশকে জানানো হয়, সম্প্রতি রিষড়ায় ঘটে যাওয়ায় অশান্তির ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলতে চায় তারা। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি পুলিশ। দীর্ঘ ক্ষণ বাদানুবাদ চলার পর ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কমিটির সদস্যেরা। ফিরে যাওয়ার আগে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দলের অন্যতম সদস্য প্রাক্তন আইপিএস অফিসার রাজপাল সিংহ বলেন, ‘‘দেশের আইন দেশের সব মানুষকে যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার দিয়েছে। ১৪৪ ধারা মেনে এক জন এক জন করে যেতে চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু পুলিশ তাতেও রাজি হয়নি।’’
পুলিশ কিছু লুকোচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন রাজপাল। বলেন, ‘‘আমরা রিষড়ায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতাম। সেই দিন পুলিশের কী ভূমিকা ছিল? মানুষের কতটা ক্ষতি হয়েছে? এই বিষয়েই তথ্য সংগ্রহ করতাম। কিন্তু আমাদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হল। পুলিশ কি কিছু লুকোতে চাইছে? আমরা কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। সেখানে নিজেরা মিটিং করব। পরবর্তী পদক্ষেপ সেখানেই ঠিক হবে।’’
এ বিষয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট জানিয়েছে, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলেই কোনও প্রতিনিধি দলকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এলাকায় এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। এই ভাবে এত জনকে ওখানে যেতে দেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই আটকানো হয়েছে।’’