ফাইল চিত্র।
রাজ্যে এখনও থমকে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প। এর মধ্যেই হুগলির বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ওই প্রকল্পে গত চারটি অর্থবর্ষে (২০১৭-২০২২) সামাজিক নিরীক্ষায় ওঠা অভিযোগগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন। অভিযোগের সংখ্যা প্রায় সাড়ে আট হাজার।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চারটি অর্থবর্ষে সামাজিক নিরীক্ষায় উঠে আসা ১৫ হাজার ২৩২টি অভিযোগের মীমাংসা হয়নি দীর্ঘদিন। তার মধ্যে সরেজমিনে প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে এসে অনেক অসঙ্গতির অভিযোগ ছিল কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলেরও। গত ২৩ জুন অভিযোগের নিষ্পত্তি সংক্রান্ত চিঠি সব বিডিওর কাছে পাঠিয়ে আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পোর্টালে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরে কাজে গতি আসে।
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রকল্পের আইনেই সামাজিক নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নির্দেশিকার পর ব্লক পর্যায়ে কাজগুলি দ্রুত হচ্ছে। এ দিন পর্যন্ত কাজের পর বাকি প্রায় সাড়ে ৮ হাজারের মতো।” তবে এই সামাজিক নিরীক্ষার সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের সক্রিয়তা থাকা বা না থাকার কোনও যোগ নেই বলে তাঁর দাবি।
জেলার বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ক্ষেত্রে সামাজিক নিরীক্ষায় মূলত যে সব অভিযোগ উঠে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে— মাস্টার রোলে ভুয়ো নাম, পুকুর সংস্কারে যে পরিমাণ মাটি কাটার কথা বলা হয়েছে প্রকৃতপক্ষে তার অর্ধেকও হয়নি, বৃক্ষরোপণের বোর্ড থাকলেও গাছ নেই, কাজের জায়গায় ডিসপ্লে বোর্ড না-থাকা, মহিলা শ্রমিকদের জন্য কাজের ক্ষেত্রে অস্থায়ী শৌচাগার না থাকা, কাজ করে সময়ে টাকা না পাওয়া ইত্যাদি।
নিয়ম অনুযায়ী এই সব অভিযোগ প্রথমে পঞ্চায়েত স্তর এবং পরে ব্লক স্তরে না মিটলে শেষে জেলা প্রশাসনে শুনানি ডেকে নিষ্পত্তি করার কথা। ১০০ দিন প্রকল্প ছাড়াও সামাজিক নিরীক্ষা হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা এবং সামাজিক সহায়তা প্রকল্পগুলিতে।
এ দিকে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিকেরা কেন গত ডিসেম্বর থেকে মজুরি পাচ্ছেন না, কেনই বা জেলার শ্রমবাজেট তথা কাজের দিন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে এখনও অনুমোদন হয়নি তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে কোনও পরিষ্কার ব্যাখ্যা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।