Eid al-Fitr

গরমের তীব্রতা কমতেই দুই জেলায় জমল ইদের বাজার

হুগলি এবং হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনের মারকাটারি গরমে বিকেল পর্যন্ত কার্যত মাছি তাড়াতে হচ্ছিল। বিক্রি হচ্ছিল সন্ধ্যার পরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া-চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫০
Share:

ইদের কেনাকাটার ভিড় উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা

এলাকায় অশান্তি-গোলমাল হলে, তার প্রভাব ব্যবসায় কেমন পড়ে, চলতি মাসে টের পেয়েছে হুগলির রিষড়া। এখন গোলমাল নেই। সব দোকানের ঝাঁপ খোলা। খাঁ খাঁ বাজার প্রাণ পেয়েছে।

Advertisement

আজ, শনিবার খুশির ইদ। তার আগের দিন এখানে দেখা গেল, ব্যবসা জমে উঠেছে। রেডিমেড পোশাক থেকে চুড়ি, সুরমা, লাচ্ছা-সিমুইতে মজে ভিড়। শহরের ছাই রোড এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী সন্দীপ সাউ বলেন, ‘‘মাঝে বেশ কয়েক দিন দোকান বন্ধ থাকায় বাজার খারাপই গিয়েছে। তবে, শেষ বেলায় বাজার ভাল হয়েছে।’’ মহিলাদের পোশাক বিক্রেতা সঞ্জয় সাউয়ের কথায়, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় ভালই ভিড় হয়েছে।’’

হুগলি এবং হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনের মারকাটারি গরমে বিকেল পর্যন্ত কার্যত মাছি তাড়াতে হচ্ছিল। বিক্রি হচ্ছিল সন্ধ্যার পরে। শুক্রবার আকাশ ছিল মেঘলা। দু’-এক ফোটা বৃষ্টিও পড়েছে। কষ্ট উধাও। ফলে, মানুষ আনন্দে কেনাকাটা সেরেছেন।

Advertisement

খানাকুল, গোঘাট, পুরশুড়া, আরামবাগের বিভিন্ন গ্রাম থেকে খদ্দের এসেছেন আরামবাগ শহরে। বিবেকানন্দ মোড় সংলগ্ন বড় মসজিদতলায় হরেক পসরা সাজানো দোকানের মালিক আব্দুল রহিম খান বলেন, ‘‘আকাশ মেঘলা থাকায় দুপুর ২টোর মধ্যেই প্রায় ৫০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছে।’’ মৌলানা শেখ ইশা হকের উচ্ছ্বাস, ‘‘আজ প্রায় রেকর্ড ভিড়। রাত পর্য়ন্ত এই কেনাকাটা বজায় থাকলে, প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হবে।’’ সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, বাজারদর কিছুটা চড়া ছিল। তবে, এ নিয়ে তিরোলের বাসিন্দা কাজি সেলিম নামে এক দিনমজুর বললেন, “সারা বছরের উপার্জনের একটা অংশ সরানো থাকে এই পরবের জন্য। দাম নিয়ে ভাবছি না।’’

গত দু’বছরের তুলনায় চাঁপদানি, বৈদ্যবাটীর বিভিন্ন বাজারে এ বার ইদে বিকিকিনি ভাল বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। চাঁপদানির পোশাক বিক্রেতা মোহিত সাউ বলেন, ‘‘অনেকটা দাম বৃদ্ধি সত্বেও বেচাকেনা ভাল হয়েছে।’’ বৈদ্যবাটীর পোশাক বিক্রেতা জয়ন্ত চৌধুরীও একই কথা জানান। পান্ডুয়া, মগরার বিভিন্ন দোকানে দুপুর থেকেই ভিড় জমে। শ্রীরামপুরেও এ দিন ভালই বেচাকেনা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকেই হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, আমতা-সহ বিভিন্ন বাজারে থিকথিকে ভিড়। উলুবেড়িয়া ও বাগনান শহরে ঢোকার মুখে পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। উলুবেড়িয়ার রেডিমেড পোশাক ব্যবসায়ী দেবাশিস বেজ বলেন, ‘‘অন্যান্য বছরের তুলনায় ব্যবসা ভাল হয়েছে। বিশেষ করে লেহেঙ্গা বেশি বিক্রি হয়েছে।’’ আর এক ব্যবসায়ী শেখ সিরাজুলের কথায়, ‘‘কয়েক দিন ধরেই খদ্দের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’’ পোশাক, খাবারদাবারের পাশাপাশি মহিলাদের প্রসাধনী দোকানেও ভিড় উপচে পড়ে। বিকেল ৪টের পরে উলুবেড়িয়ার বাজারে পা ফেলার জো ছিল না।

প্রবল গরম, মূল্যবৃদ্ধি, রোজগারের সমস্যায় ইদের বাজার সে ভাবে জমেনি বলে জানিয়েছেন সাঁকরাইলের ব্যবসায়ীদের একাংশ। গত ১২ বছর ধরে ইদে আতর ও টুপি বিক্রি করেন এবং সুরমা পরান সোফিয়ান মল্লিক। তাঁর কথায়, ‘‘করোনার সময় বাদ দিলে এ বার বাজার সব থেকে খারাপ। আতর ও টুপি বেশিরভাগই পড়ে। আজ বিকেলে প্রথম সুরমা পড়ালাম।’’ ফলবিক্রেতা সাহাবুদ্দিন তরফদার বলেন, ‘‘এখানে দর্জি ও জরির কাজের বাজার প্রায় নেই। অধিকাংশ মানুষ কারখানায় অল্প মাইনের কাজ করছেন। ফলে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলের দামও আকাশছোঁয়া। বিক্রিবাটা অনেক কম।’’ তবে, একই বাজারের সিমুই ও লাচ্চা বিক্রেতা জব্বর মোল্লার কথায়, ‘‘আশা পূরণ না হলেও, গত বছরের তুলনায় বিক্রি কিছুটা

হলেও বেড়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement