ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধোঁয়া ওড়েনি ডানলপের চিমনি দিয়ে। সোমবার সেই চৌহদ্দিতেই এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই কারখানার পুনরুজ্জীবন নিয়ে কোনও সুখবর শোনাবেন তিনি, শ্রমিকদের অনেকেই এই প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে এ বার একই মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে শ্রমিকের একাংশের প্রত্যাশার পারদ চড়ছে। আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী এখানে সভা করবেন।
ডানলপের ‘খারাপ সময়’ শুরু বাম আমলেই। সেই সময় ডানলপের পুনরুজ্জীবনের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। ২০০৮ সালেতৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ‘ডানলপ বাঁচাও কমিটি’র সভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। এখনকার সিঙ্গুরের মতো সেই সময় রাজ্যে ভোট এলেই রাজনীতির বিতর্কে ডনলপ কারখানাও ঢুকে পড়ত।এক সময় হুগলি শিল্পাঞ্চলে দেশের প্রথম মোটর গাড়ি কারখানা হিন্দমোটর এবং প্রথম টায়ার কারখানা ডানলপ ছিল স্তম্ভ। দু’টিই আজ বন্ধ।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউতের বক্তব্য, দ্বিতীয় বার অর্থাৎ ২০১৬ সালে তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে ডানলপকে বাঁচিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিধি অনুয়ায়ী বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু কেন্দ্র উচ্চবাচ্য করেনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোটের মুখে এখন সোনার বাংলা গড়া নিয়ে বিজেপির কথার শেষ নেই। এটা ওদের ছদ্মচরিত্র। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সব সময়ই আশার প্রতীক। আমিও ডানলপের শ্রমিক ছিলাম। তাই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে আপত্তি কোথায়?’’
ডানলপ বাঁচাও কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা অমিত রায়। তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে অ্যাগ্রোপার্ক হচ্ছে। চাষের জমিতে ফের চাষও হচ্ছে। উৎপাদনহীন ডানলপের ১৩০ জন শ্রমিক রাজ্য সরকারের দশ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন প্রতি মাসে। আমরা সবাই চাইছি, ডানলপেশিল্প ফিরুক।’’
ডানলপে সভা হওয়ায় বিজেপির জেলা নেতাদের একাংশও ভেবেছিলেন, এই কারখানা নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কিছু ভাবনা আছে। যদিও তেমন কিছু শোনা যায়নি। হুগলির বিজেপি নেতা তথা দলের তরফে ঝাড়গ্রামের পর্যবেক্ষক স্বপন পাল বলেন, ‘‘সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আমাদের শুধু ডানলপ কেন, রাজ্যজুড়ে নানা শিল্পের জন্য নির্দিষ্ট ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল তো রাজনৈতিক হিংসাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। গঠনমূলক কাজে মতি নেই। তোলাবাজি করে সব শেষ করে দিয়েছে।’’