সতর্ক করছেন পরিবেশকর্মী, চিকিৎসকেরা
Pollution at Howrah Mumbai Highway

ডাম্পার থেকে ছাই উড়ে বিষ ছড়াচ্ছে বাতাসে

মঙ্গলবার সকালে উলুবেড়িয়ার খলিসানি রথতলায় মুম্বই রোডে ফ্লাই অ্যাশ বোঝাই একটি ডাম্পার উল্টে যায়। ছাই রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৬
Share:

মুম্বই রোড দিয়ে এ ভাবেই ছুটছে ছাইবোঝাই ডাম্পার। নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় সড়কে গতির ঝড় তুলে ছুটছে ছাইবোঝাই ডাম্পার। তা থেকে রাশি রাশি ছাই উড়ছে। হাওড়ায় মুম্বই রোডে এ দৃশ্য পরিচিত। মোটরবাইক চালকদের অভিযোগ, ছাই উড়ে চোখে পড়ে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। পরিবেশকর্মী, চিকিৎসকেরাও আতঙ্কিত। তাঁদের বক্তব্য, এই ছাই বা ফ্লাই অ্যাশ পরিবেশের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর। নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকলে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে উলুবেড়িয়ার খলিসানি রথতলায় মুম্বই রোডে ফ্লাই অ্যাশ বোঝাই একটি ডাম্পার উল্টে যায়। ছাই রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং গাড়ি চালকদের মধ্যে চর্চা আরও বেড়েছে। তাঁদের ক্ষোভ, ছাই যাতে না ওড়ে, সে জন্য ডাম্পার ভাল ভাবে ঢেকে দেওয়ার কথা। অথচ তা করা হয় না। ছাই তোলা হয় অতিরিক্ত। উঁচু হয়ে থাকে। দায়সারা ভাবে এক ফালি প্লাস্টিক ঢেকে দেওয়া হয়। তাতে ছাই ওড়া আটকায় না। কোনও কোনও ডাম্পারে ঢাকা ছাড়াই ছাই নিয়ে যাওয়া হয় বলেও জানালেন অনেকে। পুলিশ-প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে প্রতি দিন শ’য়ে শ’য়ে ডাম্পার এ ভাবে যাতায়াত করে বলে অভিযোগ।

হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তার দাবি, ঢাকা না দিয়ে ছাইবোঝাই ডাম্পার দেখলে সতর্ক করা হয়। জরিমানাও করা হয়। তাঁর সংযোজন, ‘‘এ বার থেকে নজরদারি বাড়ানো হবে।’’

Advertisement

খলিসানির বাসিন্দা তাপস কোদালি বলেন, ‘‘বাইক নিয়ে মুম্বই রোডে যাতায়াত করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডাম্পার থেকে ছাই উড়তে থাকে। কখনও গাড়ির ঝাঁকুনিতে ছাই রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বাইক চালকদের চোখে ঢুকলে চোখ জ্বালা করতে থাকে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।’’ পাঁচলার বাসিন্দা রেজাউল করিমের দাবি, ‘‘ছাই শুধু গাড়ির আরোহীদের
চোখের ক্ষতি করছে, তা নয়। রাস্তার ধারের বাড়িঘরেও ছাইয়ের আস্তরণ পড়ছে। খাবারে পড়ছে। প্রশাসনের নজরদারি নেই।’’

জানা গিয়েছে, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ফ্লাই অ্যাশ বিভিন্ন কারখানা বা বহুতল তৈরির জন্য নিচু জমি ভরাট করতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ রয়েছে, ডাম্পারে ছাই নিয়ে যেতে কিছু নিয়ম মানতে হবে। প্রথমত, ডাম্পারে তোলার পরে ছাই জল দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, ত্রিপল দিয়ে ছাই এমন ভাবে ঢেকে দিতে হবে, যাতে না ওড়ে।

উলুবেড়িয়ায় ছাই ব্যবসায় যুক্ত এক ব্যক্তির বক্তব্য, ‘‘ডাম্পার চালকদের বার বার বলা হয়, সম্পূর্ণ ঢেকে তবেই ছাই নিয়ে যাতায়াত করতে। অনেকে তা করেন। হয় তো অনেকে প্লাস্টিক ভাল ভাবে না বাঁধায় হাওয়ায় খুলে যায়। ফের ওঁদের সতর্ক করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement