Bantika-Bainchi

‘সর্বাঙ্গসুন্দর’ পঞ্চায়েতের তকমা বাঁটিকা-বৈঁচিকে

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জলের অপ্রতুলতা কাটাতে পিছিয়ে পড়া আদিবাসী এলাকা হালদার দিঘি এবং তফসিলি প্রধান মল্লিকপুকুরে পাম্প সহযোগে অগভীর নলকূপ করা হয়েছে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৯
Share:

পান্ডুয়া ব্লকের বাঁটিকা বৈঁচি গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন।পান্ডুয়া

নিজস্ব তহবিল মজবুত। পরিষেবা নিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ প্রায় নেই। গ্রামোন্নয়নের কাজে বিরোধীদের অভিযোগ তেমন শোনা যাচ্ছে না। নিকাশি নালা ও পানীয় জলের অপ্রতুলতা মেটাতে কাজ চলছে।

Advertisement

হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে পান্ডুয়া ব্লকের বাঁটিকা-বৈঁচিকে ‘সর্বাঙ্গসুন্দর’ বলে মান্যতা দিয়েছে জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর। তাকে ‘মডেল’ করে জেলার অন্য পঞ্চায়েতগুলিকেও উৎসাহিত করা চলছে জানিয়েছেন জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা।

গুণগত পরিষেবার লক্ষ্যে গত অর্থবর্ষ থেকে হুগলির সব পঞ্চায়েতের কর্মী এবং জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ চলছে। কাজকর্মের অগ্রগতির তদারকি করতে প্রতি সপ্তাহে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করছে জেলা প্রশাসন। ওই প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সর্বাঙ্গসুন্দর পঞ্চায়েত বাঁটিকা-বৈঁচি। নাগরিক পরিষেবা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধি করে পঞ্চায়েতের সশক্তিকরণ, আর্থিক স্বচ্ছতা, অভিযোগ প্রতিকারের সক্ষমতা-সহ নানা বিষয়ে ত্রুটিমুক্ত প্রশসান হিসাবে তারা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। সব ক’টি পঞ্চায়েতেকেই এ রকম ‘আদর্শ পঞ্চায়েত’ হিসাবে গড়ে তোলার কাজ চলছে।’’

Advertisement

মোট ২২টি সংসদ নিয়ে বাঁটিকা-বৈঁচি পঞ্চায়েত। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতটির প্রধান মালা বেগম বলেন, “এখানে পরিষেবা নিতে এসে কাউকে ফিরতে হয় না। হাতে-হাতে তা দেওয়া হয়। বছরে এখন আঙুলে গোনা ৪-৫টি মাত্র অভিযোগ জমা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা হয়। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এলাকার যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজকর্মে তীক্ষ্ণ নজর রাখি আমরা।”

যাঁর সময় থেকে এই তৎপরতা শুরু, সেই প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান সদস্য জাহির আব্বাস বলেন, “পরিষেবা উন্নত করার পাশাপাশি পরিকাঠামোগতও কোনও খামতি রাখা হয়নি। নিজস্ব তহবিলে প্রতি মাসে গড়ে ৫ লক্ষ টাকা থাকে। নানা কর আদায় ছাড়াও একটি পার্ক এবং লজ ও তার নীচের তলায় দোকান ভাড়া দিয়ে ওই আয় নিশ্চিত করা হয়েছে।” পঞ্চায়েতটির ২২ জন সদস্যের মধ্যে বিজেপির দু’জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুনিয়াডাঙার নবা মুর্মু এবং বৈঁচি পূর্বপাড়ার মৌসুমি তিওয়ারিও জানিয়েছেন, বিরোধী বৈষম্য কমিয়ে বিভিন্ন কাজের গতি বেড়েছে। দু’টি এলাকাতেই দীর্ঘদিনের নিকাশি নিয়ে যে সমস্যা ছিল, সেই কাজ শুরু হয়েছে।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জলের অপ্রতুলতা কাটাতে পিছিয়ে পড়া আদিবাসী এলাকা হালদার দিঘি এবং তফসিলি প্রধান মল্লিকপুকুরে পাম্প সহযোগে অগভীর নলকূপ করা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প চলাকালীন তাতে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকে কাজ দেওয়া গিয়েছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যৌথ বা একক কর্মসূচি চালিয়ে জনস্বাস্থ্য এবং এলাকা পরিচ্ছন্নতায় সাফল্য মিলছে। এ বছর গুজরাট থেকে ফেরা এক পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়া এখনও পর্যন্ত আর কোনও ডেঙ্গি আক্রান্ত নেই। ওই ব্যক্তিও সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।

২০২২-২৩ অর্থবর্ষেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবর্ষের জন্য সার্বিক সুরক্ষিত গ্রাম গড়তে ৯টি বিষয়ভিত্তিক (স্বাস্থ্যকর, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত জীবিকাযুক্ত, শিশুবান্ধব, মহিলাবান্ধব ইত্যাদি) পরিকল্পনা রচনা বাধ্যতামূলক করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ থেকে তা নিয়ে পঞ্চায়েত কর্মী এবং জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement