স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড বিতরণ উলুবেড়িয়ায়। উপস্থিত রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় ও বিধায়ক সমীর পাঁজা। ছবি: সুব্রত জানা।
দুই জেলার অন্তত ২৩৯ জন ছাত্রছাত্রী শনিবার ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড’ পেলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এ দিন ওই কার্ড বিলির শিবির করে। হাওড়া জেলায় কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ৫০ জন পড়ুয়ার হাতে ওই কার্ড তুলে দেয়। হুগলিতে ১৮৯ জন ছাত্রছাত্রীকে কার্ড এবং ঋণ অনুমোদনপত্র দেওয়া হয়েছে।
উলুবেড়িয়াতে জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সদর দফতরে শিবির হয়েছিল। ওই ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন ৭৩২ জন। তার মধ্যে ২৫টি আবেদন পদ্ধতিগত কারণে বাতিল হয়। প্রাথমিক ভাবে অনুমোদন হয়েছে ২৩২টি আবেদন। তার মধ্যে থেকেই ৫০ জনের হাতে এ দিন কার্ড তুলে দেওয়া হয়। যাঁরা কার্ড পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ— সব বিভাগের পড়ুয়ারা আছেন। ৫০টি কার্ডের মাধ্যমে মোট ৮৭ লক্ষ ৬৪৩ হাজার ৫৯৮ টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।
শিবিরে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়, ওই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা, উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক শমীককুমার ঘোষ এবং প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং জেলাশাসক মুক্তা আর্য ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শিবিরের খোঁজখবর নেন।
পুলকবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, টাকার অভাব যেন কোনও মেধাবী পড়ুয়ার কাছে উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। সেই নির্দেশ মেনেই জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ছাত্রছাত্রীদের পাশে পুরো শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ সমীরবাবু বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের কার্ড দেওয়ার বিনিময়ে কোনও কিছু বন্ধক রাখা বা অভিভাবকদের আয়ের প্রমাণপত্র চাওয়া হয়নি। আবেদনকারী কোনও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া এবং মেধাবী কি না, সেটাই বিবেচনা করা হয়েছে। যাঁরা ঋণ পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে বহু নিম্ন আয়ের পরিবারের পড়ুয়া আছেন।’’ বাকি আবেদনকারীদেরও শীঘ্রই কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে বলে সমীরবাবু জানান।
কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ছাড়াও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এ দিন বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কেও শিবির করে কার্ড
দেওয়ার কথা বলা হয়। কয়েকটি ব্যাঙ্ক শিবির করলেও তা হয়েছে নামেই। কার্ড দেওয়া হয়েছে কোথাও দু’টি
বা তিনটি।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ককে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার কথা রাজ্য সরকারই বলেছে। স্বাভাবিক ভাবেই হাওড়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বেশি। তবে অন্য কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কও শিবির করেছে।’’
হুগলিতে জেলা সদর এবং মহকুমা স্তরে শিবির হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আরামবাগে ৪০ জন, শ্রীরামপুরে ৭১ জন, চন্দননগরে ২৫ জন এবং সদরে ৫৩ জনের হাতে এই পরিষেবা তুলে দেন জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি এবং সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসক ও অন্য আধিকারিকরা। হুগলি জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক, দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সহায়তায় এই পরিষেবা দেওয়া হয়।